শনিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তৈরি হচ্ছে সমৃদ্ধ তথ্যভাণ্ডার

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে তৈরি করা হচ্ছে সমৃদ্ধ তথ্যভাণ্ডার। এজন্য সংগ্রহ করা হচ্ছে পরিবারভিত্তিক প্রত্যেক রোহিঙ্গার বিস্তারিত তথ্য। ‘পরিবারভিত্তিক গণনা’ শীর্ষক এ তথ্য সংগ্রহ চলবে গণনা শেষ হওয়া পর্যন্ত। জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জানা যায়, বর্তমান তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলছে পরিবারভিত্তিক। একটি পরিবারে কার কজন সন্তান রয়েছে, ছেলে-মেয়ের বয়সসহ পৃথক তথ্য নেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে মিয়ানমারে তার জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, গ্রাম এবং কোন পাড়ার বাসিন্দা— বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। গণনার প্রথম দফায় ৫৮৫টি পরিবারের ৮ হাজার জন রোহিঙ্গা এবং দ্বিতীয় দফায় গত ৩০ অক্টোবর ২২ হাজার জন রোহিঙ্গার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ ও বান্দরবানের শিবিরে ২ লাখ ১৬ হাজার রোহিঙ্গা (খাদ্য সরবরাহের তালিকামতে) পরিবার আছে বলে জানা যায়। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পরিবারভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ করে একটি সমৃদ্ধ তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে গণনা একটি চলমান প্রক্রিয়া। সর্বশেষ রোহিঙ্গাকে গণনা না করা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।’ জানা যায়,           বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের মধ্যকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নানা প্রক্রিয়া এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য গঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সিদ্ধান্তমতে, গত মধ্য নভেম্বর থেকে কক্সবাজারের উখিয়ার জামতলী ও টেকনাফের উনচিপ্রাং শরণার্থী শিবির থেকে ৪৮৫ পরিবারের ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গাকে প্রথম দফায় প্রত্যাবাসন শুরুর কথা। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও টেকনাফের কেরুণতলী সীমান্ত দিয়ে দৈনিক ১৫০ জন করে রোহিঙ্গাকে মিয়নমারে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তও হয়। এ প্রক্রিয়ায় ১৫ নভেম্বর ৩০ পরিবারের ১৫০ জনকে ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের কথা ছিল। এ প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দুই দেশই রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সামগ্রিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গারা যেতে রাজি না হওয়ায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া থমকে যায়। অনিশ্চয়তা দেখা দেয় প্রত্যাবাসনে। তবে নাম প্রকাশ না করে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গারা যেতে রাজি না হওয়ার কারণে পরিবারভিত্তিক গণনা কার্যক্রমটি অনেক বেশি কাজে আসবে। গণনার পর তারা আর নিজেকে অস্বীকার করতে পারবে না। কারণ বর্তমানে সংগ্রহ করা তথ্যভাণ্ডারে তাদের বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রোহিঙ্গাদের কারণে তারা প্রতিনিয়তই নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। এর মধ্যে অর্থনৈতিক, আবাসন ও সামাজিক অস্থিতিশীলতা অন্যতম। তা ছাড়া স্থানীয়রা এখন সংখ্যালঘু ও রোহিঙ্গারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে ক্রমে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার যদি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সব সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে মিয়ানমারেও ওপর চাপ বাড়ায়, তাহলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব।

সর্বশেষ খবর