শনিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
কৃষি

মেহেরপুরের কুঁচিয়া মাছ রপ্তানি হবে বহির্বিশ্বে

মাহবুবুল হক পোলেন, মেহেরপুর

মেহেরপুরের কুঁচিয়া মাছ রপ্তানি হবে বহির্বিশ্বে

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পিছিয়ে পড়া ৬০ জন কৃষক ডিস্ক পদ্ধতিতে কুচিয়া মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। বিশেষ করে গাংনী উপজেলার নিত্যানন্দপুর, পাকুড়িয়া, যুগিন্দা ও সাহারাবাটি গ্রামে এ চাষ শুরু হয়েছে বাণিজ্যিকভাবে। তাদের উৎপাদিত মাছ চীন, জাপান, বাহরাইন, থাইল্যান্ডসহ  বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হবে। আগামী কয়েক মাস বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবেন এই কৃষকরা। পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে মেহেরপুরের পলাশীপাড়া সমাজকল্যাণ সমিতি নামের একটি এনজিও এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ৬০ জন দরিদ্র কৃষককে বাছাই করে তাদের এ মাছ চাষে প্রশিক্ষণ দিয়েছে তারা। কৃষকরা তাদের দেখানো পথে উদ্বুদ্ধ হয়ে শুরু করেছেন কুচিয়া মাছ চাষ। প্রকল্পের মত্স্য কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, ১২ বাই ২৪ ফুটের একটি ডিস্ক তৈরি করে সেখানে প্রাকৃতিক পুকুরের পরিবেশ তৈরি করা হয়। প্রতিটি ডিস্ক খনন করে তৈরি করতে খরচ হয় তিন হাজার টাকা, মাছের পোনা বাবদ ৯ হাজার টাকা এবং ছয় মাসের খাবার তিন থেকে চার হাজার টাকা। সব মিলিয়ে একটি ডিস্কে খরচ হবে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা। ছয় মাস পর মাছগুলো বাজারজাত করা যাবে। সেখান থেকে খরচ বাদে আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা লাভ হবে কৃষকদের।

 তিনি জানান, কুচিয়া মাছের প্রধান খাবার জীবন্ত কেঁচো, ব্যাঙ, ছোট ছোট তেলাপিয়া বা পোনা মাছ। এসব খাবার দিয়ে তাদের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করতে হয়। তবে এই মাছ সাধারণত বাংলাদেশের মানুষ খায় না। এ মাছের বাজার চীন, জাপান, বাহরাইন, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আগামী ছয় মাস পর মেহেরপুরে উৎপাদিত কুচিয়া মাছ ওই সব দেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা শুরু হবে। তিনি জানান, মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘মনোপটেরাস কুচিয়া’। এটি একটি ‘ইল’ প্রজাতির মাছ। খেতে সুস্বাদু। মানবদেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিকারে এ মাছ উপকারী। উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের রিংকু মণ্ডল জানান, তিনি পাঁচটি ডিস্কের মাধ্যমে কুচিয়া চাষ করছেন। কুচিয়া মাছ চাষ তিনি মূল কাজ হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তার আশা, এখান থেকে তিনি ভালো লাভ করতে পারবেন। যুগিন্দা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি ছয়টি ডিস্ক তৈরি করেছেন। তিনিও কুচিয়া মাছ চাষ করে স্বপ্ন দেখছেন। এনজিও প্রকল্প সমন্বয়কারী কামরুল আলম জানান, পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের একটি প্রকল্প তারা বাস্তবায়ন করছেন। প্রায় ৬৫ লাখ টাকার এই প্রকল্পে এরই মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর ২০ লাখ টাকা অনুদান এবং বাকি ৪৫ লাখ টাকা ঋণ হিসেবে কুচিয়া মাছচাষিদের স্বাবলম্বী করতে দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর