সোমবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

৪০ মিনিটে ১১ সিন্দুক কেটে দুর্ধর্ষ চুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর হাই কোর্ট মসজিদ ও মাজারে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার মধ্যরাতে মসজিদ ও মাজারের  দানের টাকার ১১টি সিন্দুকের তালা কেটে সব টাকা নিয়ে পালিয়েছে এক চোর। এরই মধ্যে ৪০ মিনিটের এই চুরির সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তবে কী পরিমাণ টাকা চুরি হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানাননি মসজিদ ও মাজার কর্তৃপক্ষ। শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর হোসেন সরদার জানান, হাই কোর্ট মসজিদ ও মাজারে চুরির তথ্য পেয়ে সকালে  পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মাজার পরিচালনা কমিটি ও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকারী সংশ্লিষ্ট সবার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া মাজারের সব সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে পরীক্ষা করছেন।  গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। সিটিটিভি ফুটেজের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, মুখোশ পরা ও কালো রঙের পোশাক পরিহিত ৩০ বছরের এক ব্যক্তি বড় কাটার দিয়ে সিন্দুকের তালা কাটছে। কিছুক্ষণ হাঁটাচলা করে আবার কাটা শুরু করেন। এভাবে মোট ১১টি সিন্দুকের সব তালা কেটে টাকা বের করেন। সব টাকা লাল সালু কাপড়ে মুড়িয়ে বের হতে দেখা গেছে। মাজারে ঢুকে তালা কেটে বের হওয়া পর্যন্ত ওই চোর ৪০ মিনিট সময় নিয়েছে। গতকাল সকালে হাই কোর্ট প্রাঙ্গণে শাহ খাজা শরফউদ্দিন চিশতি (র.) মাজার ও মসজিদ সরজমিনে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সিন্দুকের তালা খোলা। খুচরা মুদ্রা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। মাজারের উত্তরপাশে নারী মুসল্লিদের ব্যবহৃত ওজুখানা ও টয়লেটের গ্রিল কাটা। এখান দিয়েই চোর ঢুকে চুরি করে পালিয়ে গেছে। জানা গেছে, মাজারের ভিতরে দুটি ও বাইরে তিনটি সিসিটিভি ক্যামেরা সবসময় সচল থাকে। এসব ক্যামেরার সব ফুটেজ শাহবাগ থানা পুলিশ নিয়ে গেছে। মসজিদ ও মাজার পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৈয়দ মো. দস্তগীর বলেন, কিভাবে কি ঘটেছে তা তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না। অনেকটা একই কথা বলেন মাজার ও মসজিদ কমিটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা নূর হোসেন খান। তিনি বলেন, দানবাক্সগুলোতে  কত টাকা ছিল বা কি পরিমাণ টাকা চুরি হয়েছে এর কোনো হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি। চুরির তদন্ত হচ্ছে। এর আগে কিছু বলতে চাই না। জানা গেছে, চুরির ঘটনার ২৬ দিন আগে সর্বশেষ সব সিন্দুক খুলে টাকা বের করেছিলেন মসজিদ ও মাজার পরিচালনা কমিটি। সাধারণত তিন মাস পর পর এসব সিন্দুকের তালা খুলে টাকা বের করা হয়। পরে ওই টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দেয় কর্তৃপক্ষ। চুরির ঘটনার রাতে দুজন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করার কথা। কিন্তু একজন সদস্য গরহাজির থাকায় চুরির ঘটনার সময় একজন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছিলেন। রাত ১০টা থকে পরদিন ভোর ৬টা পর্যন্ত মাজার ও মসজিদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন আনসার সদস্য মোতালেব। তিনি বলেন, প্রতিদিন রাত ১০টার দিকে মসজিদ ও মাজারের গেটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা আনসার ক্যাম্প, মসজিদ ও মাজারের আশপাশে রাতে টহল দেন। তিনি বলেন, ওই রাতে দুজনের দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও আমার সঙ্গী আব্দুর রাজ্জাক তার স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে গ্রামের বাড়িতে যান। আমি একাই দায়িত্ব পালন করি। রাত ১টা থেকে দেড়টার দিকে টহলের সময় দেখি মসজিদের মহিলাদের টয়লেটের পাশে বড় জানালার গ্রিল কাটা এবং নারীদের নামাজখানায় প্রবেশের কলাপসিবল গেটের তালাও কাটা। পরে আনসার কমান্ডারকে ডেকে তুলি। এরপরই ভিতরে গিয়ে দেখি দানবাক্সের তালা ভেঙে টাকা চুরি হয়েছে। 

সর্বশেষ খবর