শিরোনাম
রবিবার, ৬ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
সেই নারীর পাশে ফখরুল

একদিন এই নির্মমতার বিচার হবে

নোয়াখালী প্রতিনিধি

একদিন এই নির্মমতার বিচার হবে

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে গতকাল সমবেদনা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভোটের রাতে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের শিকার পারুল বেগমের পাশে থাকবে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল দুপুরে জেলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে তাকে দেখতে এসে বিএনপি মহাসচিব পারুলের মাথায় হাত বুলিয়ে আবেগ আপ্লত কণ্ঠে এই অভয় দেন। তিনি বলেন, ‘বোন আমরা তোমার পাশে আছি। তোমার কোনো ভয় নেই। বোন, এই নিমর্মতার অবশ্যই একদিন বিচার হবে। আল্লাহ বিচার করবেন।’ মাথায় হাত বুলানোর সময়ে আবেগে কেঁদে ফেলেন মির্জা ফখরুল। এ সময়ে চারপাশের নেতাদেরও অশ্রুসজল হয়ে পড়তে দেখা যায়। পারুলের কান্নার সঙ্গে তার স্বামী সিএনজিচালকও বিএনপি মহাসচিবকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকেন। এরপর জেএসডির আ স ম আবদুর রব ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীও পারুলকে মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেন। পরে পারুলকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল, আ স ম আবদুর রব ও কাদের সিদ্দিকী আর্থিক অনুদান দেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পারুলের স্বামী ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। জেনারেল হাসপাতালের ৯ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন পারুল। পরে সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভোটের অধিকার  থেকে আওয়ামী লীগ মানুষকে বঞ্চিত করেছে, তাদের প্রতারিত করেছে। এই বঞ্চিত করার পরে যেহেতু তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে, মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে সে জন্য তারা এখন গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের পূর্বে, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরবর্তীতে যে সহিংসতা সৃষ্টি করেছে তাতে অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে। এমনকি আমার বোন নোয়াখালীতে ধর্ষিতা পর্যন্ত হয়েছেন, চার সন্তানের মা তিনি। আমরা এর ধিক্কার জানাচ্ছি, তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। জনগণের কাছে এর বিচার দিচ্ছি। আওয়ামী লীগের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান  নেওয়া এটা দেশের রাজনীতিতে একটা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করবে। আমরা মনে করি, একটা অন্ধকার যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ, একদলীয় শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন করার তাদের যে নীলনকশা সেদিকে তারা এগিয়ে গেল।’ এর বিরুদ্ধে আপনারা কী করবেন সাংবাদিকদের এ রকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব।’ এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, জয়নুল আবদিন ফারুক, আতাউর রহমান ঢালী, শামসুল আলম, মাহবুবউদ্দিন খোকন, হারুনুর রশীদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, কামরুজ্জামান রতন, শিরিন সুলতানা, রেহানা আকতার রানু, সৈয়দ আসিফা আশরাফী পাপিয়া, শামীমা বরকত লাকী, হারুনুর রশীদ, আকবর  হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হাবিবুর রহমান খোকা, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার, স্থানীয় নেতা জেলা সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, শহর সভাপতি আবু নাসের, অঙ্গ সংগঠনের মঞ্জুরুল আজিম সুমন, নূরুল আমিন খান, সাবের আহমেদ, মিজানুর রহমান মিজান, আবু হাসান নোমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সকাল সাড়ে ৭টায় গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে বিএনপি মহাসচিব জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের নিয়ে নোয়াখালী রওনা হন। কুমিল্লায় ৪৫ মিনিট যাত্রাবিরতির পর  বেলা সাড়ে ১২টায় বিএনপি মহাসচিব নেতাদের নিয়ে  নোয়াখালীর জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছান। এ সময়  নোয়াখালীর মাইজদী সড়ক থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত নেতা-কর্মীরা দুই ধারে দাঁড়িয়ে বিএনপি মহাসচিবসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে স্বাগত জানায়।  নেতা-কর্মীরা দলের কারাবন্দী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভোটারশূন্য ‘ভুয়া’ নির্বাচনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। পরে বিএনপি মহাসচিব জেলা আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর মির্জা ফখরুলসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা জয়নুল আবদিন ফারুক ও আবদুল আউয়াল মিন্টুর বাড়িতে যান। এরপর  ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেন তারা।

সর্বশেষ খবর