সৌদি আরবের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। গতকাল সৌদি আরবের রিয়াদে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সমঝোতা চুক্তিটিতে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের প্রিন্সিপ্যাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান। সৌদি আরবের পক্ষে স্বাক্ষর করেন দেশটির সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুতলাক বিন সালিম আল উজাইমিয়া।
সৌদি আরব ও বাংলাদেশ এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় সামরিক প্রশিক্ষণ, অনুশীলন ও শিক্ষা, সামরিক তথ্য ও গোয়েন্দা, প্রতিরক্ষা শিল্প, সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণ, পরিদর্শন ও দক্ষতা বিনিময়, সামরিক চিকিৎসা ও গবেষণা, ক্রীড়া, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সামরিক সদস্য বিনিময়, সমুদ্র নিরাপত্তা ও জলদস্যু দমনে সহযোগিতা করবে। জানা গেছে, চুক্তিটি অবশ্য পালনীয় নয়। অর্থাৎ, চুক্তি করা হলেও এর সব ধারা মানতে বাধ্য হবে না বাংলাদেশ। এ চুক্তির আওতায় সৌদি আরব-ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় মাইন অপসারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুটি ব্যাটালিয়নের প্রায় এক হাজার ৮০০ সেনা সদস্য অংশ নিতে পারে। এ ছাড়াও সৌদি আরবের বিভিন্ন সামরিক, বেসামরিক অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা অংশ নিতে পারে।
চুক্তির আওতায় সেনাবাহিনীর অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের সৌদি আরবের বিভিন্ন সামরিক খাতে নিয়োজিত করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ চুক্তির বিষয়ে গত বুধবার পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক জানান, চুক্তিটিতে প্রধান বিবেচনায় থাকবে তিনটি বিষয় : অ্যাডভাইজরি, মাইন সুইপিং ও সিভিল কনস্ট্রাকশন। তবে কোনো অবস্থাতেই জাতিসংঘ বাহিনীর অংশ হওয়া ছাড়া বিদেশের অন্য কোনো ক্ষেত্রে বা রণাঙ্গনে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী অংশ নেবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নীতির কথা বুধবার আবারও স্মরণ করিয়ে দেন পররাষ্ট্র সচিব। তিনি জানান, ইসলাম ধর্মের সর্বোচ্চ তীর্থস্থান মক্কা বা মদিনায় হামলার ঘটনা ঘটলে জাতিসংঘ বাহিনী ছাড়াও সৈন্য পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে পারে বাংলাদেশ।