বুধবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
হাই কোর্টের রুল

নিমতলী ট্র্যাজেডির পর সুপারিশ বাস্তবায়ন না করা কেন বেআইনি নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিমতলীতে অগ্নিকান্ডের পর মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নে সরকারের সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট। ওই ঘটনায় ১২৪ জন নিহত হয়েছিল। চক বাজারের  চুড়িহাট্টার অগ্নিকান্ডে  নিহতদের ক্ষতিপূরণ, কেমিক্যাল গুদাম সরিয়ে নেওয়াসহ বেশি কিছু নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল  বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করে। আদালত একই ঘটনায় করা আরও তিনটি রিটের ওপর গতকাল শুনানি নিলেও, সেসব রিটের ওপর আদেশ প্রদান চার সপ্তাহের জন্য মূলতবি করেছে।

জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন রাসায়নিক ও কেমিক্যালের মজুদ, বিক্রি, বিপণন ও বহনে আইন এবং নীতিমালা প্রণয়ন ও সেই আইন ও নীতিমালা কঠোরভাবে মেনে চলতে বিবাদীদের প্রতি কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, শিল্প সচিব, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সচিব,  বিসিআইসির চেয়ারম্যান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ ১০ জন বিবাদীকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ইউনুছ আলী আকন্দ, ব্যারিস্টার মো. রিয়াজ উদ্দিন প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

রিট আবেদনের শুনানিতে হাই কোর্ট চকবাজারের অগ্নিকান্ডে  নিহতদের পরিবারকে কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে কি না, তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের কাছে জানতে চায়। জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এক লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এটা অপর্যাপ্ত উল্লেখ করে হাই কোর্ট পাঁচ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দেওয়া হবে বলে মত প্রকাশ করেন। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এ দুর্ঘটনার জন্য সরকার তো দায়ী না। পাঁচ লাখ টাকা বেশি হয়ে যাবে। পরে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়াতে আদালত বিষয়টিকে মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে অ্যাটর্নি জেনারেলকে সরকারের উচ্চমহলের সঙ্গে আলাপ করতে বলেন।

আদেশের পর রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, শুধু ব্যারিস্টার নূর মুহাম্মদ আজমী ও খন্দকার কাওসারের করা রিটের ওপর রুল জারি করেছেন। বাকি তিনটি রিটের আদেশ ও শুনানি চার সপ্তাহের জন্য মুলতবি রেখেছেন।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পুরাতন ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকান্ডে  পুড়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৬৯ জন। আহত হন আরও অনেক। এখানকার নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনের সামনে অগ্নিকান্ডে র সূত্রপাত হয়। আবাসিক ভবনটিতে কেমিক্যাল গোডাউন থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ, কেমিক্যাল গুদাম অন্যত্র অপসারণ, অনুমোদিত ভবন ভেঙে ফেলাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা চেয়ে পৃথক চারটি রিট করা হয় হাই কোর্টে।

সর্বশেষ খবর