চিকন লম্বা, ডোরা কাটা শরীর। দেখতে অনেকটা বেতের মতো। হয়তবা এ জন্যই এই সাপের নাম হয়েছে ডোরা বেত আঁচড়া।
একসময় আমাদের দেশের বনাঞ্চলে এদের খুব বেশি দেখা যেত। কিন্তু এখন আর আগের মতো এদের দেখা মেলে না। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা বাগানের একটি বাংলোতে এই সাপটি দেখা মেলে। এদের ইংরেজি নাম Painted Bronzeback. আর বৈজ্ঞানিক নাম Dendrelaphis pictus.. স্বর্প বিষারদরা জানান, বাংলাদেশের সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি বনাঞ্চল ছাড়াও মধুপুর ও সুন্দরবনের বনাঞ্চলে এই সাপের দেখা মিলে। এরা লম্বায় ৫০ থেকে ৭০ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। অনেক সাপের মতো এই সাপও লাজুক। এদের কোনো প্রকার বিষ নেই। যদিও খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে চলে এলে মানুষ বিষধর মনে করে অনেক সময় মেরে ফেলে এই সাপকে। দেখতে বেতের মতো লম্বা। মাথা হলুদ রঙের। শরীরের উপরি অংশ বাদামী রং। আর শরীরের নিচের অংশ সাদা। পেটের মধ্যে কালো লম্বা রেখা টানা রয়েছে। এদের খাবারের তালিকায় রয়েছে ব্যাঙ, ব্যাঙাচি ও ছোট আকারের গিরগিটি জাতীয় প্রাণী। রাতে ও দিনে দুই সময়েই এরা সক্রিয় থাকে। এরা সাধারণত গাছেই বসবাস করে এবং এক গাছ থেকে আরেক গাছে লাফ দিয়ে চলাচল করে। এরা ভয় পেলে নিজেকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য শরীরের রং হালকা পরিবর্তন করতে পারে। স্ত্রী সাপ ৩-৮টি ডিম দিতে পারে। বাচ্চা ফুটতে ৮৫-১২৬ দিন সময় লাগে। ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের বন্যপ্রাণী গবেষক অনিমেষ ঘোষ বলেন, ডোরা বেত আঁচড়া সাপ এখন আস্তে আস্তে আমাদের দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। কারণ এরা বন-জঙ্গলের সাপ। দিনে দিনে বনাঞ্চল কমে যাওয়ায় এদের বসবাসের জায়গা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।