ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ ও দালালদের জটলার কারণে রোগী-স্বজনরা হাসপাতালে ঢুকতে পারেন না। ডাক্তার-নার্স সংশ্লিষ্টরা পারেন না রোগীদের প্রতি সঠিক মনোনিবেশ করতে। এমন চিত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে। আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও চিকিৎসা সেবার উন্নতি হয়নি। এখানে চিকিৎসকের পদ ১১টি, আছেন ইউএইচসহ ৬ জন। এর মধ্যে প্রতিদিন দুই থেকে তিনজনের বেশি হাসপাতালে আসেন না। যারা আসেন তাদের আসা-যাওয়াও ইচ্ছামাফিক। সম্প্রতি সরেজমিন আখাউড়া হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জুনিয়র কলসালটেন্ট গাইনি ডা. শাহনাজ বেগম, মেডিকেল অফিসার মোহাম্মদ নিয়ামুল হক ও আইয়ুব চৌধুরী নিজ নিজ কক্ষে রোগী দেখছেন। রোগীরা ডাক্তার দেখিয়ে বের হয়ে এলেই হাসপাতালের বারান্দা ও গেটে পূর্ব থেকে জটলা করে থাকা ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা রোগীদের ঘিরে ধরেন প্রেসক্রিপশন দেখতে। একপর্যায়ে তারা মোবাইলে প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে নেন। পরবর্তীতে হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তারদের তা প্রদর্শন করে তার কোম্পানির ওষুধ না লেখার জন্য বেকায়দায় ফেলেন। অভিযোগ রয়েছে, দালালরা হাসপাতালে আসা রোগীদের বিভ্রান্ত করেন ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। হাসপাতালের সর্বত্র তাদের অবাধে অবৈধ বিচরণ লক্ষণীয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীদের প্রতি অবহেলা ও নার্সরা খারাপ ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে। চলতি বছরের পয়লা জানুয়ারি এ হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সের অবহেলায় সজিব মিয়া (১৬) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয় হাসপাতালজুড়ে। সজিবের স্বজনদের অভিযোগ, ডাক্তার ও নার্সের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারণে সজিবের মৃত্যু হয়েছে। ওই দিন জরুরি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন ডা. কাজী শাহরিয়ার রবিন আজহার ও নার্স জুলিয়া বেগম। পরে ওই ডাক্তার অন্যত্র চলে যান। আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রাশেদুর রহমান জানান, এখানে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। আরও চিকিৎসকের জন্য আবেদনও করা হয়েছে। চিকিৎসক পাওয়া গেলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।