আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শান্তি ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস বিশ্বব্যাপী সমস্যা। এ সমস্যা বাংলাদেশেও ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় আমরা জঙ্গি, সন্ত্রাস দমন করতে সক্ষম হয়েছি।’ তিনি বলেন, সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
গতকাল গণভবনে পেশাজীবীদের সম্মানে ইফতার মাহফিলে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি দেশের উন্নতি করতে হলে অবশ্যই শান্তি প্রয়োজন। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। এজন্য দেশবাসীর কাছে আমি দোয়া চাই। সবার সহযোগিতা চাই। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা শুরু করেছি। সেই ধারা অব্যাহত রাখব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও লাখো শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা দেশটাকে স্বাধীন করে দিয়েছেন। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার কাজ শুরু করলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় তিনি হাতে পেয়েছিলেন। যখন দেশটি অর্থনৈতিকভাবে গড়ে তুলছিলেন তখন ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা জাতির পিতাকে হত্যা করে। আমরা দুই বোন দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যাই। সেই কালরাতে আমরা হারিয়েছিলাম আমার মা-বাবা-ভাইসহ আত্মীয়স্বজন। আর বাঙালি জাতি হারিয়েছিল তাদের স্বপ্নদ্রষ্টাকে। উন্নত জীবনের সারথিকে। সেদিন আমরা ঘাতকের জাতি হিসেবে পরিচিতি পাই বিশ্বে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে গড়ে তুলতে চাই। জাতির পিতা যে স্বপ্ন নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, সেই সুফল যেন ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারি। বাঙালি জাতিকে বিশ্বে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যেতে পারি।’ প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতার শুরুতেই বলেন, ‘প্রতি বছর রমজানে আমরা একত্রিত হই। আমি সব সময় ঘুরে ঘুরে সবার সঙ্গে দেখা করি। কিন্তু আমি দুঃখ প্রকাশ করছি, ঘুরে ঘুরে কারও সঙ্গে দেখা করতে পারলাম না। কারণ ১৫-১৬ দিন হলো আমার চোখের অপারেশন হয়েছে।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কী করব, বয়স হয়েছে, চোখে ছানি পড়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘বাইরে যেতে ডাক্তারের নিষেধ আছে। আজকে যারা এখানে উপস্থিত হয়েছেন, সবাইকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’তিনি বলেন, ‘দেশবাসী এবং বিদেশে বসবাসকারী বাঙালিদের মাহে রমজানের মোবারকবাদ জানাই। রমজান দোয়া কবুলের মাস। সবাই বাংলাদেশের জন্য দোয়া করবেন।’ এর আগে বিকাল ৬টা ২৬ মিনিটে তিনি ইফতার প্যান্ডেলের ভিতরে প্রবেশ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, সিনিয়র সাংবাদিক তোয়াব খান, কৃষিবিদ ড. মির্জা আবদুল জলিল, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে-আলম, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া ইফতার মাহফিলে অংশ নেন প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, আবদুল বাছেত মজুমদার, অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী, আইইবির সভাপতি প্রকৌশলী আবদুস সবুর, বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনককান্তি বড়ুয়া, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শহিদুল্লাহ সিকদার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান, নাট্যব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, মামুনুর রশিদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, চিত্রনায়ক ফেরদৌস, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ইকবাল আর্সনাল, স্বাচিপ নেতা অধ্যাপক ডা. আবদুল আজিজ এমপি, ব্যবসায়ী নেতা কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।