দেশের গাড়ি চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার সময় চোখ এবং ডোপ (মাদক গ্রহণ করার) পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানোর পর মারা যাওয়া রাজীব হাসানের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সংক্রান্ত রিটের রায়ে গতকাল এমন নির্দেশনা দিয়েছে আদালত। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়। রায়ে দুই মাসের মধ্যে রাজীবের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রায়ে আদালত বলেছে, গত বছর জাতীয় সংসদে পাস হওয়া বহুল আলোচিত ‘সড়ক পরিবহন আইন’ ছয় মাসের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। লাইসেন্স দেওয়ার সময় চালকদের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা ও ডোপ টেস্ট করাতে হবে। এ ছাড়া বাসে যত্রতত্র যাত্রী না তোলা, চলন্ত অবস্থায় বাসের দরজা বন্ধ রাখা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল বা সংরক্ষিত এলাকার সামনে অ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো যানবাহনের হর্ন না বাজানোরও নির্দেশনা রয়েছে রায়ে। রায়ে হাই কোর্ট বলেছে, রাজধানীতে বেপরোয়া গাড়ি চলছে কি না তা সিসিটিভির মাধ্যমে চিহ্নিত করতে হবে। এ ছাড়া রাজধানী সড়কজুড়ে যেসব পরিবহন রয়েছে, তা একটি কোম্পানির অধীনে নিয়ে বিভিন্ন রঙে ভিন্ন ভিন্ন রাস্তায় পরিচালনা করতে হবে। আদালতে রায় ঘোষণার সময় রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোতাহার হোসেন সাজু এবং বিআরটিসির পক্ষে মো. মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারান সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব। এ ঘটনায় গত বছরের ৪ এপ্রিল রাজীবের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে রিট করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ওই বছরের ১৬ এপ্রিল মারা যান রাজীব।