রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

বজ্রপাতে ৮ জেলায় ১৭ জন নিহত

প্রতিদিন ডেস্ক

বজ্রপাতে আট জেলায় গতকাল ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এর বেশির ভাগই কৃষক। পাবনা, ময়মনসিংহ, চুয়াডাঙ্গা, সুনামগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নেত্রকোনা, রাজশাহী ও কিশোরগঞ্জে ঘটনাগুলো ঘটেছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

পাবনা : বেড়া উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের পাচুরিয়া গ্রামে পাট জাগ (পচানোর) দেওয়ার সময় বজ্রপাতে একই পরিবারের তিনজনসহ চারজন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন পাচুরিয়া গ্রামের মৃত জুলে সরদারের ছেলে মোতালেব সরদার (৫৫), তার ছেলে ফরিদ উদ্দিন সরদার (২২), শরিফ উদ্দিন সরদার ও মৃত ফরিক উদ্দিনের ছেলে রহম আলী (৫৫)। গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিফ আনান সিদ্দিকী স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, তারা নিজ বাড়ির পাশের একটি ডোবায় বৃষ্টির মধ্যে পাট জাগ দিচ্ছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত হন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার করে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ময়মনসিংহ : ফুলপুর ও ফুলবাড়িয়ায় গতকাল দুপুরে বজ্রপাতে তিনজন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন ফুলপুরের উপজেলার বওলা ইউনিয়নের রামসোনা গ্রামের আবদুল মজিদের ছেলে সোহাগ মিয়া (২৫), পয়ারী গ্রামের ওয়াহেদ আলীর ছেলে জামাল উদ্দিন (৪০) ও ফুলবাড়িয়া উপজেলার হাতিলেইট গ্রামের মলিন বর্মণের ছেলে চৈতন বর্মণ (২২)। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রামসোনার সোগাগ মিয়া দুপুরে বাড়ির পাশে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। একই উপজেলার পয়ারী ইউনিয়নের পয়ারী গ্রামের জামাল উদ্দিন দুপুরে বাড়ির পাশে ধান খেত থেকে ফেরার পথে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। রাঙামাটিয়া ইউনিয়নের বড়বিলা বিলে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে চৈতন বর্মণ নামে এক জেলে মারা যান। চুয়াডাঙ্গা : আলমডাঙ্গা উপজেলার খোরদ গ্রামের একটি কলাবাগান থেকে কলা কাটার সময় বজ্রপাতে তিনজন নিহত হন। তাদের সবার বাড়ি মেহেরপুরের কানাইডাঙ্গা গ্রামে। গতকাল বিকালে এ ঘটনা ঘটে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সোনিয়া আহমেদ জানান, বজ্রপাতে নিহতরা হলেন কানাইডাঙ্গা গ্রামের গোলাম রসুলের ছেলে মোহাম্মদ হুদা (৩৫), মকবুল হোসেনের ছেলে আল আমিন (৩০) ও বরকত আলীর ছেলে হামিদুল ইসলাম (৩০)। তিনজনই হাসপাতালে পৌঁছার আগেই মারা যান। তারা সবাই কৃষিশ্রমিক। তারা মেহেরপুর থেকে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় কৃষিকাজ করতে এসেছিলেন। অন্য শ্রমিকরা তাদের লাশ মেহেরপুরে নিয়ে গেছেন। সুনামগঞ্জ : তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের মানিকখিলা গ্রামের হারিদুল মিয়া (৪৭) ও তার ছেলে তারা মিয়া (১২)। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মানিকখিলায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, হারিদুল মিয়া ও তার ছেলে ছোট নৌকা নিয়ে মানিকখিলার সামনের হাওরে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতের শিকার হন। আশাপাশের জেলেরা তাদের উদ্ধার করে তাহিরপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বজ্রপাতে তাদের শরীরের একাধিক স্থান পুড়ে গেছে বলে হাসপাতালসূত্র জানিয়েছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে শিশুসহ দুজন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের ঘুঘুডিমা গ্রামের বাবলুর ছেলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র হৃদয় (১৩) ও মহারাজপুর ইউনিয়নের টিকরা গ্রামের শামসুদ্দিন দফাদারের ছেলে ভদু (৫৭)। সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মৌদুদ আলম খাঁ জানান, বজ্রপাতে নিহতদের পরিবারকে ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। নেত্রকোনা : গরুকে ঘাস খাওয়াতে গিয়ে কলমাকান্দা সীমান্তে বজ্রপাতে এনামুল হক (২২) নামে এক তরুণ কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের সন্ন্যাসীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রংছাতির ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক জানান, সন্ন্যাসীপাড়ার মোহাম্মদ আলীর ছেলে এনামুল হক গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিপাতের সময় বাড়ির পাশে পতিত জমিতে গরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য যান। এ সময় বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাজশাহী : গোদাগাড়ীতে বজ্রপাতে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। তার নাম দুরুল হুদা। গতকাল বিকাল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তিনি জমিতে কাজ করছিলেন। কিশোরগঞ্জ : নিকলীতে বজ্রপাতে কালা হাসিম (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি সাজনপুর গ্রামের আবদুল আমীনের ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে বাড়ির সামনের হাওর থেকে গরু নিয়ে আসার সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই কালা হাসিম ও একটি গরুর মৃত্যু হয়।

সর্বশেষ খবর