শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

তথ্যভাণ্ডার হ্যাক করে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট বানাতেন আতিকুর

নিজস্ব প্রতিবেদক

জন্ম ও মৃত্যু সনদ নিবন্ধনের জাতীয় তথ্যভান্ডার হ্যাক করে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট বানাতেন আতিকুর রহমান। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মাঈনুদ্দিন, নেত্রকোনার কুল্লাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা সদস্য মামুনুর রশিদ এবং রাজধানীর বাড্ডার শারমিন নামে এক নারীর যোগসাজশে এসব করতেন তিনি। এ ঘটনায় বুধবার সবুজবাগ থানায় মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামলা করে র‌্যাব। এর আগে গত ১১ নভেম্বর উত্তর বাসাবোর বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আতিকুরের বাড়ি               কক্সবাজার সদরের পূর্বপোকখালী গ্রামে। র‌্যাব-২ এর এস আই লিটন কুমার ম লের করা মানি লন্ডারিং মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় জাহাঙ্গীর আলম, মামুন অর রশিদ, শারমিন আক্তার ও মাইনউদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। গত ৭ নভেম্বর রিমান্ডে তারা জানায়, আতিকুর রহমান, মাঈনুদ্দিন, মামুনুর রশিদ এবং শারমিনের যোগসাজশে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে কম্পিউটারের মাধ্যমে জন্ম ও মৃত্যু সনদ নিবন্ধনের জাতীয় তথ্যভান্ডারে প্রবেশ করে জালিয়াতি করতেন। একই সঙ্গে ডিজিটাল ডিভাইস ও সিস্টেম ব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ ও প্রকাশ করতেন। এরপর অনুমতি ছাড়া তথ্য সংগ্রহ, অবৈধ ই-ট্র্যানজেকশন এবং সরকারি গোপনীয়তা ভেঙে তথ্য ধারণ করতেন; যা হ্যাকিং অপরাধ। এরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধ জন্ম সনদের রেফারেন্স কাজে লাগিয়ে রোহিঙ্গা, পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের পাসপোর্ট বানিয়ে দিতেন। এ ছাড়াও তাদের বিদেশ যেতেও সহায়তা দিয়ে আসছিলেন। এসব কাজে আতিকুর ও তার সহযোগী দীন ইসলাম সরাসরি জড়িত ছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আতিকুর র‌্যাবকে জানিয়েছেন, তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য জন্ম সনদ তৈরিতে জাহাঙ্গীর আলম, মামুন অর রশিদ, শারমিন আক্তার ও মাইনউদ্দিনের সহায়তা নিয়েছেন। আর নারায়ণগঞ্জের ঝালকুড়ি পাসপোর্ট অফিসের দালাল আজিম, হেদায়েত, ফজলুল করিম, সাইফুল, মাইনউদ্দিনের মাধ্যমে পাসপোর্ট বানাতেন। র‌্যাব জানিয়েছে, আগে গ্রেফতার হওয়া মাইনউদ্দিনের দেওয়া তথ্যে আতিকুরকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর সবুজবাগে অ্যাডভোকেট রেদওয়ানের বাসা থেকে তার দুটি লাগেজ জব্দ করা হয়। সেখানে অবৈধ ১১টি জন্ম সনদ, ১৪টি পাসপোর্ট, নগদ ৮৪ হাজার টাকা, ৩টি মোবাইলফোন জব্দ করা হয়। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরে ৬০ হাজার ডলার পাচারের প্রমাণ পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়ার একটি ব্যাংকে ৪ লাখ ২৭ হাজার ডলার এবং সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংকে ৬০ হাজার ডলার পাওয়া গেছে আতিকুর রহমানের নামে। দেশের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টেও তার নামে রয়েছে ৭০ লাখ টাকা।

সর্বশেষ খবর