বুধবার, ১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

বন্দুকযুদ্ধে তিন জেলায় নিহত ৩

প্রতিদিন ডেস্ক

বাগেরহাটে সুন্দরবন ও দিনাজপুরের বিরামপুর এবং পাবনার সাঁথিয়ায় র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তিনজন নিহত হয়েছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

সুন্দরবনে বন্দুকযুদ্ধে বনদস্যু নিহত : বাগেরহাটে পূর্ব সুন্দরবনে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বনদস্যু ফারুক বাহিনীর প্রধান ফারুক মোড়ল (৩৮) নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন দুই র‌্যাব সদস্য। গতকাল সকালে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের কোদাল্লিয়া খাল এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে র‌্যাব সদস্যরা তল্লাশি চালিয়ে বনদস্যুদের ব্যবহৃত একটি দেশি বন্দুক, একটি রাম দা, হাসুয়া, ১১ রাউন্ড তাজা গুলি ও ১৪ রাউন্ড গুলির খোসাসহ নৌকা ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেন। খুলনা র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল রওশনুল ফিরোজ জানান, বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কোদাল্লিয়া খালে সোমবার গভীর রাতে একদল বনদস্যু জেলেদের জিম্মি করে বিকাশের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করছিল। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব সদস্যরা ওই এলাকায় অভিযান শুরু করেন। অভিযানের একপর্যায়ে গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে র‌্যাব সদস্যরা সুন্দরবনের কোদাল্লিয়া খাল এলাকায় পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে অবস্থান নিয়ে থাকা বনদস্যুরা তাদের ওপর গুলি ছুড়তে থাকেন। এ সময় আত্মরক্ষার্থে র‌্যাব সদস্যরাও গুলি চালান। উভয়পক্ষের মধ্যে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে চলা বন্দুকযুদ্ধের একপর্যায়ে এক বনদস্যু গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় বাকি বনদস্যুরা সুন্দরবনের গহীন অরণ্যে পালিয়ে যান। র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে বনদস্যুদের ব্যবহৃত একটি দেশি বন্দুক, একটি রাম দা, হাসুয়া, ১১ রাউন্ড তাজা গুলি ও ১৪ রাউন্ড গুলির খোসাসহ নৌকা ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেন। গুলিবিদ্ধ বনদস্যুকে মোংলা উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালে উপস্থিত লোকজন নিহত বনদস্যুকে ফারুক বাহিনীর প্রধান ফারুক মোড়ল বলে শনাক্ত করেন। নিহত ফারুক মোড়ল খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার কলাবগি গ্রামের আকবর মোড়লের ছেলে। দুপুরেই নিহত দস্যুর লাশ ও উদ্ধার হওয়া অস্ত্র-গুলি মোংলা থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব।                  

দিনাজপুরে মাদক ব্যবসায়ী নিহত : মাদক উদ্ধার করতে গিয়ে দিনাজপুরের বিরামপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ফেরদৌস ফাহিম নামে একজন নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, তিনি মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। এ ঘটনায় পুলিশের দুই এসআই ও এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, তিনটি গুলির খোসা, একটি হাসুয়া, দুটি ছোরা, ১০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান বিরামপুর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান মনির। নিহত ফেরদৌস ফাহিম (৩৩) দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ইউপির আওলাকুড়ি গ্রামের জহুরুল হকের ছেলে। গতকাল ভোরে বিরামপুর উপজেলার মিরপুর মাঠের পাশে একটি আমবাগানে এ ঘটনা ঘটে। বিরামপুর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান মনির এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সীমান্ত এলাকা থেকে একদল মাদক ব্যবসায়ী মাদক নিয়ে আসছে- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিরামপুরের মিরপুর মাঠের পাশে একটি বাগানে অবস্থান নেয় পুলিশ। মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অতর্কিত গুলি ছোড়ে। অত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি ছোড়ে। পরে ঘটনাস্থলে মাদক ব্যবসায়ীদের গুলিতে ফেরদৌস ফাহিম নামে একজন নিহত হয়। এ সময় পুলিশের এএসআই শাহাজাহান, এএসআই নিরঞ্জন এবং কনস্টেবল দেলোয়ার হোসেন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দিনাজপুর পুলিশ লাইন হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

পাবনায় ডাকাত সর্দার নিহত : পাবনার সাঁথিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সরোয়ার ব্যাপারী ওরফে সরো নামের একজন নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, নিহত ব্যক্তি আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সর্দার ও হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, সাঁথিয়া উপজেলার শামুকজানি বাজারে ডাকাতির উদ্দেশ্যে একদল ডাকাত গোপন বৈঠক করছে- এমন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার  দিবাগত রাত ২টার দিকে পাবনা ডিবি ও সাঁথিয়া থানা পুলিশ সেখানে যৌথ অভিযানে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। কিছু সময় গুলিবর্ষণ চলার একপর্যায়ে ডাকাতদলের সদস্যরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ সরোয়ার ওরফে সরোকে উদ্ধার করে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি বন্দুক, একটি কার্তুজ ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের দুজন সদস্য আহত হয়েছেন। নিহত সরোয়ার উপজেলার পু রিয়া গ্রামের হারুন অর রশিদ ওরফে হারু ব্যাপারীর ছেলে।

সর্বশেষ খবর