বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে গিয়ে ব্যাংকিং খাত কঠিন সংকটের মুখে পড়েছে। পুরনো সমস্যার সঙ্গে নতুন করে আরও জটিলতা যোগ হয়েছে। ঋণের চাহিদা কমে যাওয়া, সঙ্গে ঋণের কিস্তি স্থগিত হয়েছে। ফলে ব্যাংকের কার্যক্রম অনেকাংশ কমে যাবে। এতে ব্যাংকের মুনাফা ঘাটতি হবে। ব্যাংকের এই দুর্দিনে দেশীয় শিল্প রক্ষার জন্য বিশেষ এসএমই খাতে নজর দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ জন্য ৫ থেকে ৬ হাজার কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন তহবিল গঠন করতে পারে। ব্যাংকগুলো ২ থেকে ৩ শতাংশে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ঋণ দিতে পারবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকগুলোর সামনে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ। জুন পর্যন্ত ঋণ আদায় কমে যাবে। রেমিট্যান্স কমছে। পুরনো ঋণ আদায় হবে না। পরবর্তী সময়ে একসঙ্গে সবাই টাকা ফেরত দেবে না। নতুন করে অর্থায়ন করতে হবে। এগুলো সামলানো কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে। তাই তারল্য সংকট তীব্র হতে পারে। এ জন্য এখনই উদ্যোগ নিতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারকে। তিনি বলেন, সরকার এরই মধ্যে সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন করেছে। এটি যেন সব ব্যাংক চালু করে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। শুধু ব্যাংকিং খাত নয়, উদ্যোক্তা বা শিল্প খাতে উৎপাদন প্রক্রিয়া চালু রাখতে হবে। আপাতত সব বন্ধ হলেও এ পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সব শিল্প খাতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে। যেহেতু ব্যাংকে তারল্য কমে যাবে, তাই এই তারল্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সরবরাহ করতে হবে। সে জন্য এসএলআর আরও কমানো যেতে পারে। সিআরআর কমানো হয়েছে, এটাও কমানো যেতে পারে। বিশেষ রেপো হার কমানোতে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, প্রবাসীরা বিদেশে কঠিন সমস্যার মুখে পড়েছেন। অনেক প্রবাসী কাজ হারাবে। রেমিট্যান্স কমেছে। এটা আরও কমবে। ব্যাংকগুলোকে এখন এসব প্রবাসী পরিবারকে সহায়তা করতে হবে। কীভাবে তাদের ইনটেনসিভ দেওয়া যায় তা দেখা উচিত। কৃষি খাতে কম সুদে ঋণ দিতে হবে। এ জন্য আগাম তহবিল গঠন করা উচিত। যদিও আগে থেকেই এ খাতে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সংকট আরও বাড়বে। সে জন্য খাদ্য উৎপাদন সচল রাখতে হলে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তাই সব ব্যাংককেই এগিয়ে আসা উচিত।