সোমবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

চলতি অর্থবছরে ২ থেকে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কমবে

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের প্রভাবে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি অন্তত ২ থেকে ৩ শতাংশ কম অর্জিত হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। শুধু তাই নয়, গত ৪০ বছরের মধ্যে এ বছর সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি হবে এশিয়াজুড়ে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে পুরো এশিয়ার অর্থনীতিই সংকটে পড়বে বলে মনে করে সংস্থাটি। সর্বশেষ গত অর্থবছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। সংস্থাটি একই সঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচন নিয়ে। বিশ্বব্যাংক বলছে, বছর শেষে কর্মসংস্থান ব্যাপকহারে কমে আসবে। গ্রাম ও শহরে উভয় অঞ্চলে দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাবে। গতকাল বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস’ এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার কমে যাবে ১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৯ শতাংশ। পরের অর্থবছরে (২০২১-২২) তা কিছুটা বেড়ে ২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। তবে বাংলাদেশের জন্য আশার কথা হচ্ছে, এ বছর এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। এ ছাড়া আফগানিস্তান, নেপাল, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা নেগেটিভ গ্রোথ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।  বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক বলেছে, করোনার প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে পড়বে। উৎপাদন খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাকের চাহিদা বিশ্বব্যাপী কমে যাবে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ খাতের উৎপাদন পণ্যের চাহিদাও কমবে, যা কর্মসংস্থানে ঝুঁকি তৈরি করবে। দারিদ্র্যকে আরও গভীর করবে। নগর দারিদ্র্য বাড়বে। এ ছাড়া পল্লী এলাকায় গরিবের সংখ্যা বাড়বে। দেশব্যাপী সবকিছু বন্ধ থাকায় ব্যক্তি পর্যায়ে ভোগ কমে যাবে। এমন অবস্থায় কভিড-১৯ এর ঝুঁকি কমানো এবং আর্থিক খাতের ভঙ্গুরতার ঝুঁকি কমাতে অর্থনীতিতে মধ্যমেয়াদি পুনরুদ্ধার কর্মসূচি নেওয়ার সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক। করোনার প্রভাব দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশেই পড়বে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক, যা চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর আগে বিশ্বব্যাংক বলেছিল, এবার দক্ষিণ এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে।  বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইথ শেফার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করে নিজ দেশের জনগণকে সুরক্ষা দেওয়াকে প্রাধান্য দিতে হবে। কেননা দরিদ্র মানুষেরাই সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে থাকেন। আর বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, করোনা মহামারী কতটা দীর্ঘায়িত হবে, এর ওপর নির্ভর করছে অর্থনীতিতে এর প্রভাব। বাংলাদেশ সরকার দ্রুত স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করার ফলে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতা বাড়িয়েছে। সরকারকে করোনা প্রতিরোধের কাজে সহায়তা করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ১০ কোটি ডলার দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। করোনা নিয়ন্ত্রণে এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর