মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

এগিয়ে চলছে বসুন্ধরায় অস্থায়ী হাসপাতালের কাজ

কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যতদিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে ততদিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

এগিয়ে চলছে বসুন্ধরায় অস্থায়ী হাসপাতালের কাজ

আইসিসিবিতে চলছে অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণের কাজ। গতকাল তোলা ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ধাতব ফ্রেমে তৈরি হচ্ছে ছোট ছোট আইসোলেশন কক্ষ। ভিতরে বসবে রোগীর শয্যা ও অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম। এসব কক্ষে করোনা আক্রান্তদের আলাদা রেখে হবে চিকিৎসা। গতকাল ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) এক্সপো জোনে   গিয়ে দেখা গেল, সুবিস্তৃত কম্পাউন্ডজুড়ে তৈরি করা হচ্ছে এমন কক্ষের পর কক্ষ। আইসিসিবির কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানে বিরামহীন কাজ করছেন শ্রমিকরা। মাঝেমধ্যে ট্রাক ভরে আসছে নির্মাণ উপকরণ। সংশ্লিষ্টরা জানান, এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে করোনা রোগীর চিকিৎসা শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিদেশ থেকে চিকিৎসা সরঞ্জাম আসতে দেরি হলে দু-এক দিন সময় বেশি লাগতে পারে। উল্লেখ্য, কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে তত দিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতাল নির্মাণ অগ্রগতি প্রসঙ্গে গতকাল স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার সব মার্কেট বন্ধ থাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় দোকানপাট খুলে মালপত্র কেনা হচ্ছে। পরে পুলিশের পাহারায় সেসব এখানে আনা হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা একটা প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করছি। তা না হলে কাজের অগ্রগতি আরও বেশি হতো। তিনি বলেন, আইসিসিবির এক্সপো ট্রেড সেন্টার ও আরও তিনটি কনভেনশন হলে মোট ২ হাজার আইসোলেশন বেড স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া বড় কনভেনশন হলটিতে ৭১টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) বেড স্থাপন করা হবে। আশা করছি, ১৫ দিনের মধ্যে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরু করতে পারব। আইসিইউর কিছু বেড ও সরঞ্জাম আমদানি করতে হচ্ছে। যে কারণে এটি স্থাপনে দেরি হতে পারে। ট্রেড সেন্টারটিতে এত বড় হাসপাতাল স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত টয়লেট ছিল না। ইতিমধ্যে অতিরিক্ত টয়লেট নির্মাণ কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে।

এ সময় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের (ঢাকা সিটি বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদুল আলম, আইসিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এম এম জসীম উদ্দিন বলেন, আজ (গতকাল) হাসপাতাল স্থাপনের কাজ পঞ্চম দিনের মতো চলছে। আশা করছি, ১৫ দিনের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন করতে পারব এবং চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু হবে। সম্ভব না হলে দু-এক দিন বেশি লাগতে পারে। আইসিসিবির প্রকৌশল বিভাগও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। কনভেনশন হলগুলো প্রস্তুত করাই আছে। শুধু বেড স্থাপন করতে হবে। ট্রেড সেন্টারটিকে হাসপাতালে রূপান্তর করতে যেসব কাজ করা দরকার তার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

‘দেশ ও মানুষের কল্যাণে’ এই স্লোগানের আলোয় পথচলা বসুন্ধরা গ্রুপ করোনাভাইরাসের এ দুর্যোগকালেও দেশ ও জাতির কল্যাণে এগিয়ে এসেছে। করোনা সংক্রমণে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে ৫ হাজার শয্যার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিসাপেক্ষে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে সেখানে আইসিইউসহ ২ হাজার ৭১ শয্যার হাসপাতাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে প্রয়োজন দেখা দিলে এটিকে ৫ হাজার শয্যায় রূপান্তর করা যাবে। আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর