শিরোনাম
রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

তৎপর অসাধু ব্যবসায়ীরা

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

করোনা সংকটে কৃষকের উৎপাদিত শাক-সবজি, দুধ-ডিমের দাম কমলেও রোজায় চাহিদা বাড়ে এমন সব আমদানি পণ্যের দাম চড়তে শুরু করেছে সংযমের মাসটি শুরু হওয়ার আগেই। আগামী শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে রমজান মাস। অথচ এক সপ্তাহ আগেই বেড়েছে ছোলা, পিয়াজ, ডাল, চিনিসহ বিভিন্ন ধরনের মসলার দাম। 

ব্যবসায়ীদের দাবি, লকডাউনে বন্দরের কার্যক্রম স্থবির হওয়ায় পণ্য সরবরাহে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, লকডাউনের কারণে পণ্য সরবরাহে  কিছু সমস্যা থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নিচ্ছে। এ অবস্থায় বেনাপোলসহ অন্যান্য স্থলবন্দর কার্যকর করে কীভাবে বিকল্প উপায়ে নিত্যপণ্য আমদানি করা যায় সে বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। গতকাল রাজধানীর মিরপুরে কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছোলা ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি, চিনির দাম বেড়ে কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা এবং প্রতি কেজি খেসারি ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। এক মাসে এসব পণ্যের কোনো কোনোটিতে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। রোজার আগে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম। উৎপাদন মৌসুমেও দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। অথচ গত মাসেও ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি ছিল পণ্যটির দাম। ৮০ টাকা কেজির রসুন ১৮০ টাকা আর ১২০ টাকার আদার কেজি ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। এ বিষয়ে নিত্যপণ্য আমদানিকারক হাফিজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে ধীরগতির কারণে আদা, রসুনসহ কিছু আমদানি পণ্যের সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে। তবে বন্দরে পণ্য নিয়ে প্রচুর জাহাজ ভিড়েছে বলে দাবি এই ব্যবসায়ীর। শ্যামবাজারের এই ব্যবসায়ী আরও জানান, পণ্যের দাম বাড়ার কারণ জানতে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তারা গোয়েন্দা সংস্থা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বন্দরের স্থবিরতার বিষয়টি অবহিত করেছেন। ‘আগে যে জাহাজ এক দিনে খালাস হতো সেটি এখন ১০ দিন লাগছে। বন্দরে প্রচুর মাল আছে। কিন্তু দ্রুত খালাস না হওয়ায় পণ্যজট সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে সাময়িক সময়ের জন্য দেশে পণ্যের কিছু ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দেখা যাবে সব পণ্য একসঙ্গে চলে আসলে আবার দাম কমে যাবে’, বলেন আমদানিকারক হাফিজুর রহমান।  বাংলাদেশের নিত্যপণ্য আসে প্রধানত ভারত ও চীন থেকে। লকডাউনের কারণে গত মাস থেকেই পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। শুধু তাই নয়, এলসি করা হয়েছে এমন অনেক পণ্য আটকে আছে স্থলবন্দরে সীমান্তের ওপাশে। শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ থাকায় শুধু চীনা পণ্য দিয়ে চাহিদা মেটাতে হচ্ছে। এ কারণেও চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্যের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে নিয়মিত যেসব পণ্য আসত লকডাউনের কারণে সেসব বন্ধ রয়েছে। এলসি করা অনেক পণ্য আটকে আছে বিভিন্ন স্থলবন্দরের ওপাশে। আমরা ভারতকে অনুরোধ করেছি, বিকল্প উপায়ে কীভাবে সেসব পণ্য বাংলাদেশে পাঠানো যায় সেই কৌশল বের করতে। প্রয়োজনে কার্গো বিমানে এসব পণ্য দেশে আনার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর