বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

রমজানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎই চ্যালেঞ্জ

জিন্নাতুন নূর

রমজানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎই চ্যালেঞ্জ

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গৃহবন্দী পরিস্থিতির মধ্যে আসন্ন রমজানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। লকডাউনের কারণে এক মাস ধরে মানুষ গৃহবন্দী। আবার এক দিন বাদেই শুরু হতে যাচ্ছে রমজান মাস। এ সময়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘন ঘন লোডশেডিং হওয়ায় বিদ্যুতের গ্রাহকদের দুর্ভোগও বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ প্রতিমন্ত্রীও।

নিজ বিভাগের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ রমজানে কোথাও যাতে বিদ্যুৎ ঘাটতি না হয় সেদিকে লক্ষ রাখার কথা বলেছেন। প্রয়োজনে চাহিদা মেটাতে ডিজেল, এইচএফও, গ্যাস বা এলপিজি ব্যবহার সমন্বিতভাবে করতে বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থা বা এলপিজি বিপণন ও উৎপাদন সংস্থার সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে দ্রুত গ্রাহকদের পাশে দাঁড়াতে এবং রোস্টার করে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করতে বলেছেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী গ্রিড সাবস্টেশনগুলো নিয়মিত মেরামত করারও নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা যায়, বর্তমানে দিনে দুই থেকে তিন দফা করে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে অনেক এলাকার গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, প্রায় প্রতিদিনই লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতিবার কমপক্ষে আধঘণ্টার জন্য এই বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর মগবাজার, রামপুরা, গোপীবাগ, ধানমন্ডি, মিরপুর, কাফরুল, হাজারীবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে নিয়মিত। গ্রাহকরা জানান, কয়েক দিন ধরেই এ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ব্যবহারের সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার পারিবারিক কাজকর্মের পাশাপাশি বাসা থেকেই অনেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অফিসের কাজও করছেন। অফিস-আদালত ও শিল্প-কারখানা বন্ধ থাকলেও আবাসিকে বিদ্যুতের চাহিদা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ প্রয়োজন। বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয় কিছু কারিগরি সমস্যা এবং ঝড়বৃষ্টির কারণে এই বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। তারা বলেন, বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। মূলত দুর্বল বিতরণ ব্যবস্থার কারণেই লোডশেডিং হচ্ছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জনসংযোগ পরিদফতরের পরিচালক সাইফুল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আবাসিকে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও তা আমাদের আয়ত্তের মধ্যে আছে। বর্তমানে গড়ে বিদ্যুতের চাহিদা ৮ থেকে ৯ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু আমাদের সক্ষমতা আরও বেশি। এখন যেসব স্থানে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে তা স্থানীয় সমস্যার কারণে। আর রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না।’ বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম-সচিব (প্রশাসন) রেজওয়ানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘লকডাউন শুরুর পর থেকেই বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে গ্রাহকরা যাতে এ পরিস্থিতিতে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন এ জন্য জরুরি নম্বর সরবরাহ করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে আমরা ফোনও পাচ্ছি। আসছে রমজানেও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা জরুরি ভিত্তিতে দিনরাত কাজ করবেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হতে পারে। আবার ঝড় হলেও অনেক সময় ট্রান্সফরমারে সমস্যা হয়। এতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর