বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
ওআইসির নির্বাহী কমিটির বৈঠক

কভিড-১৯ মোকাবিলায় সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

কভিড-১৯ সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মপন্থা নির্ধারণ ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-এর নির্বাহী কমিটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বিশেষ বৈঠক হয়। গতকাল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্যে ড. মোমেন এই মহামারী মোকাবিলায় ইসলামের চিরায়ত আদর্শ ও মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ থেকে উৎসারিত সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং সরঞ্জামাদি নিয়ে যে সব গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাজ করে তাদেরকে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একত্রিত করে এই মুহূর্তে অতি প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামাদির তৈরি করার কাজে লাগাতে ওআইসি সচিবালয় এবং এর অঙ্গ সংগঠনসমূহকে বাংলাদেশ আহ্বান জানায়।

অভিবাসী শ্রমিক, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও ওআইসিভুক্ত দেশে যে সব মুসলিম শ্রমিক কাজ করে, তাদের দুরবস্থার কথা মাথায় রেখে মন্ত্রী তাদের চাকরি বজায় থাকার নিশ্চয়তা প্রদানের ব্যবস্থা করার জন্য সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে অনুরোধ করেন, যাতে বেকারত্বের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি কমানো ও সামাজিক সমতা বজায় রাখা যায়। সদস্য রাষ্ট্রসমূহের স্বেচ্ছায় অনুদান প্রদানের মাধ্যমে একটি Covid-19 Response and Recovery Fund গঠনে এই সভায় বাংলাদেশ একটি প্রস্তাবনা রাখে।

এই মহামারির প্রকট না কমা পর্যন্ত মুসলিম অভিবাসীদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান এবং তাদের চাকরি রক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য মানবাধিকার সংগঠনসমূহকে নিয়ে কাজ করার জন্য ওআইসি সচিবালয়কে বাংলাদেশ পরামর্শ দেয়। দরকারি সম্পদ বণ্টনের মাধ্যমে এই মহামারীর সময়ে বিশ্বব্যাপী যে সব মুসলিম শরণার্থী রয়েছে তাদের দেখভালের বিষয়টি নিশ্চয়তার জন্য বাংলাদেশ সদস্য দেশসমূহের সমন্বিত প্রয়াসের ওপর জোরদার গুরুত্ব আরোপ করে।

বাংলাদেশ, তুরস্ক, সৌদি আরব, গাম্বিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং নাইজার- এই ছয়টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে ওআইসির বর্তমান নির্বাহী কমিটি গঠিত। এই ছয়টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা উপযুক্ত প্রতিনিধি ও ওআইসি মহাসচিবের অংশগ্রহণে নির্বাহী কমিটির এই বিশেষ বৈঠকটি সৌদি আরবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

বিরোধপূর্ণ এলাকায় বিবদমান প্রতিপক্ষসমূহকে অস্ত্রবিরতির মাধ্যমে খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানে ব্যবস্থা করার জন্য ওআইসি নির্বাহী কমিটি আহ্বান জানায়। সংশ্লিষ্ট যুদ্ধাহত দেশসমূহে খাদ্য সহায়তা প্রদানে মানবাধিকার কর্মীদেরকে অনুরোধ জানানো হয়। কভিড-১৯ ও এর পরবর্তী অবস্থা মোকাবিলার জন্য নির্বাহী কমিটি বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ-সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দ্বিপক্ষীয়, বহুপক্ষীয় সংস্থাকে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের ঋণ মওকুফসহ সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার বন্দোবস্ত করার জন্য ভেবে দেখতে অনুরোধ করা হয়।

ওআইসির ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক গ্রুপ কভিড-১৯ এর মোকাবিলায় সম্প্রতি ‘Rapid Response Initiative’-এর আওতায় ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তা ঘোষণা দেয়। এ ছাড়া ওআইসি আরেকটি সংস্থা Islamic Solidarity Fund, সদস্য রাষ্ট্রসমূহ বিশেষ করে স্বল্পোন্নত সদস্য দেশসমূহকে তাদের স্বাস্থ্য খাতে সক্ষমতা বাড়াতে একটি আলাদা হিসাব খুলেছে। এই উদ্দেশে ওআইসি সচিবালয়ের আওতায় একটি ‘coordination mechanism’ তৈরির জন্য সভায় আলোচনা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর