মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপির গানম্যান পুলিশের এএসআই কিশোর সরকারের গুলিতে আহত মাহিন উদ্দিন মহিম (৩৪) মারা গেছেন। গতকাল ভোরে সাভারের এনাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি ওই হাসপাতালে ১৬ এপ্রিল রাত থেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মহিম টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আজগানা দাবলাপাড়া গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ দুজনই মারা গেলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মনিরুজ্জামান খান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মহিমের বুকে ও পেটে দুটি গুলি লেগে শরীর ভেদ করে বেরিয়ে যায়। এক সপ্তাহ লাইফ সাপোর্টে থেকে গতকাল ভোরে তার মৃত্যু হয়। সাভার থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে। এরপর লাশ দাফনের জন্য পরিবারে হস্তান্তর করা হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, নিহত দুজন ও অভিযুক্ত পরস্পর বন্ধু ছিলেন। কিশোর সন্দেহ করতেন, তার স্ত্রীর সঙ্গে মহিমের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। তবে কিশোরের স্ত্রী মহিম নামে কাউকে চেনেন না বলে দাবি করেছেন। তদন্তে এএসআই কিশোর যে দোষী তা প্রমাণ করার মতো সব ধরনের আলামত ও প্রমাণ পাওয়া গেছে।উল্লেখ্য, ১৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে কালিয়াকৈর উপজেলার কুতুবদিয়ায় এএসআই কিশোর সরকারের গুলিতে শহিদুল ইসলাম (৩৫) ঘটনাস্থলেই নিহত ও মাহিন উদ্দিন মহিম (৩৪) আহত হন। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ মহিমকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেলে ভর্তি করে। আর অভিযুক্ত কিশোরকে ১৭ এপ্রিল দুপুরে আশুলিয়ার শিমুলিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ছয় রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল জব্দ করে পুলিশ। কিশোর কালিয়াকৈর উপজেলার কুতুবদিয়া গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র মন্ডলের ছেলে। তিনি পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রটেকশন বিভাগে চাকরি করেন। প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর গানম্যান হিসেবে নিয়োজিত।
ঘটনার পরদিন গুলিতে নিহত শহিদুল ইসলামের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে কিশোরকে একমাত্র আসামি করে কালিয়াকৈর থানায় মামলা করেন। এ ছাড়া অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা করেন কালিয়াকৈর থানার এসআই মুক্তি মাহমুদ। এদিকে ১৮ এপ্রিল আসামি কিশোর কুমারকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়। পুলিশ জানায়, করোনার কারণে আদালত বন্ধ থাকায় সেদিন রিমান্ডের শুনানি হয়নি। কিশোরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।