মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় মোবাইল চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা বাগানে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার দুই শিশু হলো- মুন্না পাশি (১২) ও জগৎ নুনিয়া (১৩)। তাদের কমলগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকাবাসী ও নির্যাতনের শিকার শিশুদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ৭টায় মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে চা বাগান হাসপাতালের কম্পাউন্ডার মামুনুর রশীদ শিশুদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান। পরে চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নারদ পাশিসহ কয়েকজন মিলে বাগান ঘরে নিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক প্রহার করে। পরে তাদের ২ জনকে কুরমা চা বাগান ফ্যাক্টরির সামনে গাছের সঙ্গে সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৮ ঘণ্টা পেছনে হাত নিয়ে বেঁধে রাখা হয়। মুন্নার মা জানান, ইউপি সদস্য দীপেন সাহা উপস্থিত থেকে তাদের পিটিয়েছেন। সঙ্গে ছিলেন চা বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি নারদ পাশি, সাদেকসহ অনেকে। বিকাল ৩টায় ছেলেদের অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তাদের অবস্থার অবনতি হলে বিকাল ৪টায় মুন্না ও জগৎকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় তারা থানায় মামলা করবেন। এ ব্যাপারে কুরমা চা বাগান ব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান বলেন, মোবাইল চুরির অপরাধে দুই শিশুকে আটকে রাখা হয়ছিল। কোনো নির্যাতন করা হয়নি। পরে অভিভাবকদের জিম্মায় মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। জানতে চাইলে ইসলামপুর ইউপি সদস্য দীপেন সাহা বলেন, শিশুদের বেঁধে রাখা হয়েছিল। তবে নির্যাতন করা হয়নি। কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মারা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাগান ম্যানেজারের কথায় তিনি প্রথমে ছাড়তে পারেননি। পরে বিকাল ৩টার পর অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দিয়েছেন। কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান জানান, মোবাইল চুরির জন্য তাদের আটকানো হয়েছিল। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে শুনতে পেয়েছি। এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।