শুক্রবার, ১৭ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

সিন্ডিকেটে কেনাকাটার নামে হরিলুট

-আবুল হাসনাৎ মিল্টন

সিন্ডিকেটে কেনাকাটার নামে হরিলুট

ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেইফটি, রাইটস অ্যান্ড রেসপনসিবিলিটিস (এফডিএসআর) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন বলেছেন,  স্বাস্থ্য খাতে দক্ষ নেতৃত্ব ও সুশাসনের অভাবেই দশকের পর দশক ধরে তিলে তিলে আজকের এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এখানে দুর্নীতিবাজরা সিন্ডিকেট গড়ে কেনাকাটার নামে হরিলুট চালিয়েছে। মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের রথী-মহারথীদের পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলে এ ধরনের দুর্নীতি সম্ভব হতো না। গতকাল তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে আরও বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নীতি নির্ধারণী পর্যায়েই অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। দীর্ঘদিন ধরে শুধু ডাক্তারকেন্দ্রিক একটা ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। যেখানে স্বাস্থ্য খাতে যে কোনো ব্যর্থতার দায় ডাক্তারদের কাঁধে চাপিয়ে পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের চেষ্টা করা হয়েছে। অথচ এই খাত নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কোনো লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় কৌশল নেই। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আজকে যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে তা রাতারাতি সৃষ্টি হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রভাবশালীরাই দুর্নীতিবাজদের মন্ত্রণালয়ে কাজের সুযোগ দেয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেন্দ্রিক এসব দুর্নীতির সঙ্গে হাতে গোনা কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাও জড়িত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের মুখোমুখি অবস্থান বিষয়ে ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন বলেন, এটা নিজের দোষ অন্যের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার একটি অপচেষ্টা। স্বাস্থ্য খাতে যা কিছু অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, সবকিছুর দায় যৌথভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের। পরস্পরের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে তারা এই দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না। রিজেন্ট হাসপাতালকে কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল করা নিয়ে মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য অধিদফতরকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে, সেই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তো স্বয়ং স্বাস্থ্যমন্ত্রীই উপস্থিত ছিলেন। তাহলে, কে কাকে কারণ দর্শায়? আশা করব, উত্তরে স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রকৃত সত্যটাই তুলে ধরবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অসংখ্য দুর্নীতির মধ্যে জেকেজি-রিজেন্ট হাসপাতালের ঘটনা স্রেফ ‘টিপ অব দ্য আইসবার্গ’। এর মধ্য দিয়ে মিঠু, জেএমআই যেন আলোচনায় হারিয়ে না যায়। তবে করোনাকালে এমন কর্মকা- অবশ্যই নিন্দনীয়। এই দুটো প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ আমি খুঁজে পাই না। হাসপাতাল হিসেবে রিজেন্টের কোনো লাইসেন্স নেই, আর জেকেজির তো নামই কোনোদিন শুনিনি। অথচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটো কাজে এদের দায়িত্ব দেওয়া হলো। স্বভাবতই সংশয় জাগে! এর পেছনে কোনো অবৈধ লেনদেন থাকলেও অবাক হব না।

সর্বশেষ খবর