শিরোনাম
সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যানও

অপবাদ দিয়ে কোমরে রশি বেঁধে ঘোরানো হলো মা-মেয়েকে

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

অপবাদ দিয়ে কোমরে রশি বেঁধে ঘোরানো হলো মা-মেয়েকে

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মা-মেয়েকে বেঁধে ঘোরানো হয় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মা, তরুণী দুই মেয়ে ও এক ছেলেসহ পাঁচজনকে ‘গরুচোর’ আখ্যা দিয়ে একদল দুর্বৃত্ত নির্মমভাবে পিটিয়েছে। পরে কোমরে রশি বেঁধে তাদের প্রকাশ্যে সড়কে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে। সেখানে চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম নিজে তাদের আবার মারধর করেন। একপর্যায়ে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে চকরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে।

মারধরের শিকার ব্যক্তিরা হলেন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার শান্তিরহাট কুসুমপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালামের স্ত্রী পারভীন আক্তার (৫৫), তার মেয়ে সেলিনা আক্তার (২৮) ও রোজিনা আক্তার (২৫), ছেলে মো. আরমান (৩০) ও পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের মো. ছুট্ট (৩৮)। শুক্রবার দুপুরে হারবাং ইউনিয়নের পহরচাঁদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার ছবি প্রকাশের পর তা ভাইরাল হয়ে যায়। পরে তাদের বিরুদ্ধে পহরচাঁদা এলাকার মাহমুদুল হক নামে এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে চকরিয়া থানায় গরু চুরির মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আহতদের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার হারবাং পুলিশফাঁড়ির পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার স্থানীয় বাসিন্দারা ফাঁড়িতে খবর দিলে গুরুতর অবস্থায় মা-মেয়েসহ পাঁচজনকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসি। আমরা তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।’ হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের নেতৃত্বে তাদের ওপর নির্যাতন হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ খবর পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদের উদ্ধার করে। মারধরের বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। তবে ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, এক দফা মা-মেয়ে ও ছেলের ওপর নির্যাতন চালানোর পর চৌকিদার (গ্রামপুলিশ) পাঠিয়ে তাদের রশিতে বেঁধে নিজ কার্যালয়ে এনে আবার নির্মমভাবে নির্যাতন করেন হারবাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম। চোর অপবাদ দিয়ে তাদের ইউপি চেয়ারম্যান বেধড়ক পেটান বলে জানান তারা। পরে চেয়ারম্যানের লোকেরাই হারবাং পুলিশফাঁড়িতে ফোন করে পুলিশ এনে তাদের হাতে মা-মেয়েসহ পাঁচজনকে আহত অবস্থায় তুলে দেন। হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মা-মেয়েসহ পাঁচজনকে পুলিশ উদ্ধার করে। মারধরে আহতদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গরুর মালিক পহরচাঁদা গ্রামের এক শিক্ষক বাদী হয়ে ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর