যশোরের জ্ঞানচর্চাভিত্তিক সংগঠন প্রাচ্য সংঘের প্রতিষ্ঠাতা বেনজীন খান বলেছেন, রাজনৈতিক কর্মকান্ড বলতে যা বোঝায় যশোরে তা দীর্ঘদিন ধরেই অনুপস্থিত। করোনাকালেও ছোট-বড় দলগুলোর যে দায়িত্ব পালনের সুযোগ ছিল, তাও তারা ঠিকমতো করেনি। করোনার দোহাই দিয়ে রাষ্ট্র বিভিন্ন সেক্টর থেকে টাকা তুলেছে। সেই টাকা রাষ্ট্রের বিভিন্ন উইংয়ের মাধ্যমে যেমন বিতরণ হয়েছে, সরকারি দলের নেতা- কর্মীদের মাধ্যমেও বিতরণ হয়েছে। তৃণমূলে দেখা গেছে যে আওয়ামী লীগ নেতার ঘনিষ্ঠরা বারবার সরকারি সাহায্য পেয়েছে। এর বাইরে বড় একটি অংশই সাহায্য পায়নি। ফলে করোনা মোকাবিলায় রাষ্ট্র যখন সবাইকে ঘরে থাকতে বলেছে, সাহায্য না পাওয়া নাগরিকদের বড় একটি অংশ সেই নির্দেশ মানতে পারেনি, পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে বাইরে বেরিয়েছে। করোনাও ছড়িয়ে পড়েছে দ্রুত। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বেনজীন খান বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে এবং সরকারি দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব ছিল, করোনা মোকাবিলায় সরকারি পদক্ষেপ যেন সফল হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা। আওয়ামী লীগ সে দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। এতে দল বিপদগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, দলের যে কোনো দুর্নীতি তার সরকারের জন্য হুমকি। বিরোধী দল নয়, মুখে জয় বাংলা বলে সরকারি দলের যারা দুর্নীতি, লুটপাট করে তারাই প্রকৃত সরকারবিরোধী। সরকারকে ব্যর্থ করে দিয়েছে এসব নেতার দুর্নীতি। মূলত আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজরাই সরকারবিরোধী। অন্য বড় দল বিএনপি প্রসঙ্গে বেনজীন খান বলেন, যশোরে এই দলটির মধ্যে গ্রুপিং প্রবল। করোনার এই সময়েও তারা একাট্টা হতে পারেনি। গ্রুপিং থেকে বেরিয়ে দলকে ঐক্যবদ্ধ করার কোনো প্রচেষ্টাও এই দলটির মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
আর এই গ্রুপিংয়ের ভিত্তি যতটা না রাজনৈতিক, তারচেয়ে বেশি ব্যক্তি স্বার্থের দ্বন্দ্ব। কোনো বড় দুর্যোগ মোকাবিলায় বিরোধী দলের দায় রাষ্ট্র, সরকার বা সরকারি দলের মতো নয়। কিন্তু এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার বা সরকারি দল ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে কিনা, তা দেখার বড় একটি দায়িত্ব তাদের ছিল, তা পালনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে তারা। আর ছোট ছোট দলগুলোর যশোরে তেমন কিছু করার মতো যোগ্যতা, ক্ষমতা বা পরিস্থিতি কোনোটাই নেই। তারপরও আমরা ছোট কয়েকটি দলকে দেখেছি হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক প্রভৃতি বিতরণ করতে।