রংপুরের মিঠাপুকুরে এক মাস ধরে স্বামীর বাড়ি থেকে এক গৃহবধূ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ রয়েছেন। ঘটনার পর স্বামীর বাড়ির লোকজন ঘরে তালা লাগিয়া পালিয়েছেন। তাঁকে হত্যার পর লাশ পুঁতে ফেলা হয়েছে বলে গৃহবধূর স্বজনরা দাবি করেছেন। এ ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন গৃহবধূর বাবা। নিখোঁজ গৃহবধূর নাম হোসনা বেগম (২০) বদরগঞ্জ উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের হাসমত আলীর মেয়ে। প্রায় দেড় বছর আগে মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের বুজরুক সন্তোষপুর আকন্দটারি গ্রামের আনারুলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে।
পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই হোসনা বেগমের ওপর অত্যাচার শুরু হয়। দুই মাস আগে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারও বেধড়ক মারধর করেন স্বামী। এতে হোসনার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। ২৬ আগস্ট মেয়ের বাড়িতে যান হোসনার বাবা হাসমত আলী। গিয়ে পুরো বাড়ি তালাবদ্ধ দেখতে পান। মেয়ে জামাইয়ের ফোনও বন্ধ পান। পরে পাশের বাড়িতে বেয়াইন আইরিন বেগমের খোঁজ মেলে। হাসমত জানতে চান, বাড়িতে তালা মারা কেন? আর আমার মেয়ে হোসনা কোথায়? এতে সন্তোষজনক কোনো উত্তর দিতে পারেননি আইরিন। পরে সন্দেহ হলে আশপাশের লোকজনের মাধ্যমে হাসমত জানতে পারেন, কয়েকদিন আগে হোসনাকে বেদম মারপিট করা হয়। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর থেকে আর তার দেখা যায়নি। হাসমত আলীর ধারণা, মেয়েকে হত্যা করে ঘরের ভিতরে অথবা অন্য কোথাও পুঁতে রাখা হয়েছে। মেয়ের সন্ধান পেতে হাসমত আলী ওই এলাকার ইউপি মেম্বার সাজু মিয়ার মাধ্যমে শালিস ডাকেন। কিন্তু ওই শালিস বৈঠকে আনারুল ও তার মা আইরিন বেগম হাজির হননি। এ ঘটনায় শুক্রবার মিঠাপুকুর থানায় জামাই ও তাঁর মায়ের নামে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হাসমত আলী। ইউপি সদস্য সাজু মিয়া বলেন, শালিসে আনারুলকে উপস্থিত থাকতে বলা হলেও সে যায়নি। পরে তার সঙ্গে দেখা করে মেয়েটার খোঁজ দিতে বলি। কিন্তু সে বলে-কোথায় গেছে আমি জানি না। বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, বিষয়টি শোনার পর মেয়ের বাবাকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। মিঠাপুকুর থানার ওসি আমিরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।