ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও প্রশিক্ষণের নামে ভুয়া বিল দেখিয়ে সাত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিচালক (আইইএম) ড. আশরাফুন্নেছাসহ পাঁচ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সংস্থাটির উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের সই করা নোটিসে তাদের আগামী ১৩, ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর হাজির হতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ নোটিস সংশ্লিষ্টদের ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে বলে গতকাল দুদকের জনসংযোগ কার্যালয় নিশ্চিত করেছে।
তলবকৃতদের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপপরিচালক (পিএম) জাকিয়া আখতার ও উপপরিচালক (স্থানীয় সংগ্রহ) আবু তাহের মো. সানাউল্লাহ নূরীকে ১৩, সহকারী পরিচালক এ কে এম রোকনুজ্জামান ও গবেষণা কর্মকর্তা পীযূষ কান্তি দত্তকে ১৪ ও পরিচালক (আইইএম) ড. আশরাফুন্নেছাকে ১৫ সেপ্টেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে দুদক-সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের আইইএম ইউনিট ওয়ার্কশপ ও সেমিনারের নামে ভাউচার করে প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের রেকর্ডপত্র তলব দুদকের : স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অনুসন্ধানের প্রয়োজনে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের রেকর্ডপত্র তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর স্বাক্ষরিত এক জরুরি পত্রে ওই হাসপাতালের কাছে কিছু জরুরি তথ্য ও রেকর্ডপত্র চেয়েছে কমিশন। ব্যাক ডেটে ডা. সোহেলী পারভীন ও ডা. মামুনুর রশীদের স্বাক্ষরিত বিল-ভাউচারসহ বিভিন্ন রেকর্ডপত্র চেয়ে বিশেষ বার্তা বাহকের মাধ্যমে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। এসব রেকর্ডপত্র আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দুদকের কাছে সরবরাহ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। কমিশনের জনসংযোগ কার্যালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিভিন্ন হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে কভিড-১৯ এর চিকিৎসায় নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জামাদি ক্রয় ও সরবরাহ, চিকিৎসকদের হোটেলে থাকা-খাওয়ার নামে সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ অন্যদের যোগসাজশে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এসব রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে।
দুদক যেসব রেকর্ডপত্র চেয়েছে তার মধ্যে রয়েছে গত মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় যেসব স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী (মাস্ক, পিপিই, স্যানিটাইজার ও অন্যান্য দ্রব্যাদি) এবং চিকিৎসা সরঞ্জামাদি কেনা হয়েছে তার আইটেমভিত্তিক বিবরণ, ব্যয় করা অর্থের পরিমাণ ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা, ক্রয় কমিটির তথ্য এবং বর্ণিত স্বাস্থ্য সরঞ্জামাদি ক্রয় সংক্রান্ত নথি ও নোটশিটের সত্যায়িত ফটোকপি। বর্ণিত স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী ও স্বাস্থ্য সরঞ্জামাদি সরবরাহের জন্য বিভিন্ন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কী পরিমাণ বিল পরিশোধ করা হয়েছে তার তথ্য এবং কী পরিমাণ স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী ও স্বাস্থ্য সরঞ্জামাদি বর্তমানে মজুদ রয়েছে সে বিষয়ে তথ্য। করোনাকালীন চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত এই হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হোটেলে রাখার ক্ষেত্রে হোটেলসমূহের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি, হোটেলে অবস্থানকারীদের তালিকা (হোটেলভিত্তিক), হোটেল ভাড়া ও খাবার বাবদ পরিশোধকৃত বিলের তথ্য এবং নোটশিটসহ সংশ্লিষ্ট নথির ফটোকপি। এ ছাড়া ডা. সোহেলী পারভীন ও ডা. মামুনুর রশীদের কাছ থেকে যেসব বিল-ভাউচারে ৪/৫ মাস আগের তারিখ দিয়ে অর্থাৎ ব্যাক ডেটে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে সে সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র ইত্যাদি।