শিরোনাম
বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

পান্না কোকিল

আলম শাইন

পান্না কোকিল

বিরল পরিযায়ী ‘পান্না কোকিল’। সুদর্শন গড়ন। প্রজাতির বৈশ্বিক বিস্তৃতি হিমালয়ের গাড়ওয়ালের পূর্বাঞ্চল থেকে নেপাল, আসাম, মিয়ানমার, দক্ষিণ-পূর্ব তিব্বত, দক্ষিণ চীন, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনাম পর্যন্ত। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে পরিযায়ী হয়ে আসে বাংলাদেশে। ফিরে যায় জুলাইয়ের শেষনাগাদ। এ স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রজনন পর্ব সেরে নেয় ওরা। বাংলাদেশে কেবলমাত্র সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনাঞ্চলে দেখা মেলে এদের। তবে সংখ্যায় একেবারেই অপ্রতুল। পান্না কোকিল সমতল ভূমি থেকে শুরু করে সমুদ্রপৃষ্ঠের ১৫০০ মিটার উচ্চতায়ও বিচরণ করে। তবে বিচরণের ক্ষেত্র অবশ্যই পাহাড়ি অঞ্চলের গাছ-গাছালিতে। বিশেষ করে গাছের মগডালে বসতে পছন্দ করে এরা। ওই সময় একাকী কিংবা ছোট দলে দেখা যায় ওদেরকে। বছরের অন্যান্য সময়ে তেমন একটা হাঁকডাক না করলেও প্রজনন মৌসুমে ‘চিরর্র-চিরর্র-চিরর্র-’ সুরে ডাকাডাকি করে। এ সময় পূর্ণিমা রাতেও ডাকে। পান্না কোকিল বিশ্বে বিপদমুক্ত। বাংলাদেশে অপ্রতুল তথ্য শ্রেণিতে রয়েছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে প্রজাতিটিকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়নি। পাখির বাংলা নাম : ‘পান্না কোকিল’, ইংরেজি নাম : ‘Asian Emerald Cuckoo’ (এশিয়ান অ্যামারল্ড কুক্কু), বৈজ্ঞানিক নাম : Chrysococcyx maculatus। এরা ‘এশীয় শ্যামা পাপিয়া’ বা ‘সবুজাভ কোকিল’ নামেও পরিচিত। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৮ সেন্টিমিটার। পুরুষ পাখির পিঠে উজ্জ্বল পান্না-সবুজের ওপর ব্রোঞ্জ-সোনালি আভা পরিলক্ষিত হয়। থুঁতনি-গলা-বুকে পান্না-সবুজের ঝিলিক দেখা যায়। বুকের নিচ থেকে তলপেট পর্যন্ত সাদার ওপর ধাতব ব্রোঞ্জ-সবুজ ডোরা থাকে। অপরদিকে স্ত্রী পাখির মাথা-ঘাড় সোনালি-লাল। পিঠের পালক ব্রোঞ্জ সবুজ। গলা-বুক-পেট সাদার ওপর বাদামি-ব্রোঞ্জ ডোরা। লেজ খয়েরি-কালোডোরা। লেজের ডগা সাদা। উভয় পাখির ঠোঁট কমলা, ডগা কালো এবং চোখ লাল। পা ও পায়ের পাতা গাঢ় বাদামি-সবুজ। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের রঙ ভিন্ন। ওদের মাথার ওপর থাকে ডোরাদাগ। অনেকটাই স্ত্রী পাখিদের মতো দেখায়। প্রধান খাবার : গাছ পিঁপড়া, শুঁয়োপোকাসহ অন্যান্য পোকামাকড়। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুলাই। জ্ঞাতিভাই কোকিলদের মতো এরাও বাসা বাঁধতে জানে না। ডিমপাড়ে মৌটুসি কিংবা মাকড়সার বাসায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর