সোমবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

পেক্স বাংলাদেশকে এশিয়ানায় দেখতে চাই

-এহছানুল হক মিলন

পেক্স বাংলাদেশকে এশিয়ানায় দেখতে চাই

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন বলেছেন, একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভেই এশিয়ান কয়েকটি দেশ ‘পেক্স এশিয়ানা’য় আবির্ভূত হয়েছে। যার অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে আছে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর, ভারত ও ভিয়েতনাম। আমরা বাংলাদেশকে সেই কাতারে দেখতে চাই।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনে আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন। আলাপচারিতায় সাবেক এই শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শত বছর পর অভিশপ্ত মহামারী কভিড-১৯ এর বিষাক্ত থাবায় বিশ্ববাসী আজ কিংকর্তব্যবিমূঢ়। স্মরণ করিয়ে দেয় বিশ্বে ঘটে যাওয়া অতীত দিনগুলোর কথা। উনিশ শতকে এই বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। যাকে বলা হতো ‘পেক্স ব্রিটানিকা’। কর্তৃত্ববাদী উপনিবেশবাদ ব্রিটিশ ও ইউরোপিয়ানের অভিভাবকত্ব ক্ষয়িষ্ণু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নব্য ক্ষমতার বাতিঘর হিসাবে আবির্ভূত হয় ‘পেক্স আমেরিকানা’। যা আজও নীরবে শাসন করে চলছে। অলৌকিকভাবে  বিগত চল্লিশ বছরে অপ্রতিরোধ্য চীন নিঃস্ব ও অনুন্নত থেকে পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থনীতির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ড. এহছানুল হক মিলন বলেন, রাত পোহালেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে মেতে উঠবে বাংলাদেশ। যদিও ৫০ বছর একটি জাতির জন্য কোনো বিশাল সময় নয়। চীনের উহান প্রদেশে জন্ম নেওয়া ভ্রমণপিপাসু প্রাণঘাতী কভিড-১৯ বিশ্ব ভ্রমণের পাশাপাশি ২০২০ সালের মার্চের প্রথম দিকেই হানা দেয় বাংলাদেশে। উন্নত বিশ্ব যখন ঢাল-তলোয়ার নিয়ে কভিড মোকাবিলায় ব্যস্ত, তখন আমরা ব্যস্ত ছিলাম বাকবিতন্ডায়। ব্যর্থ হয়েছি মাস্ক সরবরাহ করতে, প্রাণহানি ঘটেছে প্রথম সারির যোদ্ধা শত চিকিৎসকের। এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) চেয়ারম্যান বলেন, ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে বন্দী রেখেছিলাম প্রবাসীদের। ধর্ষণ আর ক্যাসিনো উৎসবে মত্ত ছিলাম আমরা। আস্থাহীনতার ভোটারবিহীন কেন্দ্রে ভোটের রেকর্ড পাঁচ শতাংশের নিচে। গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন প্যারোলে। নির্বাচনকে পাঠানো হয়েছে নির্বাসনে, গণতন্ত্র আজ কফিনে। উন্নয়নের ডামাডোলে ডিজিটাল বাংলাদেশে শিক্ষায় আবার অটোপাস। তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশকে গুনে নিতে হবে তার জনসংখ্যা তাত্ত্বিক লভ্যাংশ।  কর্মক্ষম নাগরিকদের সিংহ ভাগ ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী হলো প্রায় ৬৫ শতাংশ। আর ১৫ বছরের নিচে হলো ৩০ শতাংশ। বাকি ৫ শতাংশ হলো ৬৫ বছরের উপরে। তাই দেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের মোক্ষম সময় এখনই। তৃতীয় বিশ্বের অনুন্নত রাষ্ট্র থেকে মধ্যম আয়ের রাষ্ট্র হতে হলে আগামী দিনে মানবসম্পদ উন্নয়ন করতে হবে এবং দারিদ্র্য বিমোচনে কারিগরি শিক্ষা বাজেটে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে। আ ন ম এহছানুল হক মিলন বলেন, অপরদিকে শিল্প বিপ্লবের চতুর্থ ধাপে আজ বিশ্ববাসী। আগামী দিনের পৃথিবী মোকাবিলায় এবং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যন্ত্রমানব, ন্যানো প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ হতে হবে কারিগরি শিক্ষা। আইনের শাসন, ন্যায় বিচার, সুশাসন, জবাবদিহিতা ও টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেই বাংলাদেশ হবে ‘পেক্স এশিয়ানা’র অন্তর্ভুক্ত।

সর্বশেষ খবর