খুলনার দৌলতপুরের বণিকপাড়ায় স্কুলছাত্রী অঙ্কিতা দে ছোঁয়াকে (৯) ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। গতকাল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, দৌলতপুর থানার উদ্যোগে খুলনা-যশোর সড়কের বিএল কলেজ গেট এলাকায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।
এদিকে স্কুলছাত্রী অঙ্কিতাকে ধর্ষণ ও হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে সন্দেহভাজন গ্রেফতার হওয়া প্রিতম রুদ্র (২৭)। তিনি বণিকপাড়া বীণাপাণি ভবনের মালিক প্রভাত কুমার রুদ্রের ছেলে। অঙ্কিতার লাশ ওই ভবনের নিচতলার বাথরুম থেকে উদ্ধার হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দৌলতপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, ২২ জানুয়ারি দুপুরে বণিকপাড়া মৌচাক টাওয়ারের সামনে থেকে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী অঙ্কিতা নিখোঁজ হয়। সে পাবলা বণিকপাড়া এলাকার সুশান্ত দের মেয়ে। এ ঘটনার ছয় দিন পর ২৮ জানুয়ারি তার বাড়ি থেকে কয়েক শ গজ দূরে বীণাপাণি চারতলা ভবনের নিচতলার বাথরুম থেকে পুলিশ বস্তাবন্দী অবস্থায় মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, ওই ভবনের ছাদে ও সিঁড়ির কয়েকটি স্থানে রক্তের ছোপ দেখা গেছে। নিখোঁজ হওয়ার দিন সন্ধ্যায় ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে বস্তাবন্দী লাশটি সিঁড়িঘরে লুকিয়ে রাখা হয়। ওই স্থান থেকে রক্তের দাগ, ভেজা কাপড় ও বেশ কিছু আলামত উদ্ধার হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা জানান, লাশ উদ্ধারের পর মোট ছয়জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে নিজেকে জড়িত দাবি করে স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হয় প্রিতম। পরে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হলে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় সে। এদিকে নির্মম এই হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিচার দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী। তারা বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এ ধরনের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার মূল কারণ। তারা ন্যায়বিচারের স্বার্থে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন। এদিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর আসামি প্রিতমকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।