সুনামগঞ্জের শাল্লায় ফেসবুক পোস্টের জেরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। দায়ীদের ক্ষেত্রে কার দলীয় পরিচয় কী তা বিবেচনায় না নিয়ে জড়িত প্রত্যেকের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। গতকাল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গতকাল আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে ৩৩ জনকে গ্রেফতার করা হলো। পুলিশ সুপার বলেন, ‘উত্তেজিত জনতা জড়ো হয়ে গ্রামের পাশে মিছিল-সমাবেশ করছে এমন খবর পেয়ে শাল্লা থানার ওসি এবং ইউএনও ঘটনাস্থলে যান। নোয়াগাঁও গ্রামের অবস্থান দাড়াইন নদীর পরে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে লম্বালম্বি। পশ্চিম পাশের রাস্তায় উত্তেজিত জনতাকে থামান ওসি এবং ইউএনও। কিন্তু পূর্ব দিকে অরক্ষিত এলাকায় কিছু জনতা নদী পার হয়ে গ্রামে গিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। খবর পয়ে পুলিশ পূর্ব দিকে গেলে দুষ্কৃতকারীরা পালিয়ে যায়। প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ার পরও দ্রুততম সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ঘটনার দুই ঘণ্টার মাথায় আমি ও জেলা প্রশাসক সেখানে যাই।’ মূলত ঘটনার দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তাৎক্ষণিক ভূমিকায় মানুষের জানমালের ক্ষতি কম হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ঘটনার সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে তা পুরোপুরি অযৌক্তিক। পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামিসহ এ পর্যন্ত ৩৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তদন্তে যাদেরই সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ক্ষেত্রে কার কী দলীয় পরিচয় তা বিবেচনায় নেওয়া হবে না। প্রসঙ্গত, ১৫ মার্চ দিরাইয়ে সমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। পরদিন মামুনুলের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন নোয়াগাঁওয়ের এক হিন্দু যুবক। এই স্ট্যাটাসের জেরে হিন্দু-অধ্যুষিত ওই গ্রামটিতে হামলা চালিয়ে ৮৮টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এ ঘটনায় ৮০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত দেড় হাজার জনকে আসামি করে শাল্লা থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।