বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি নয়, হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সরকারই সম্পৃক্ত। তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় এই সরকার চরমভাবে ব্যর্থ। একটা দিনও শুনিনি জাতীয় সংসদে করোনা নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। কিংবা জনগণের আর্থিক অবস্থা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে। সেখানে শুধু বন্দনা, বন্দনা আর বন্দনার স্তুতি চলে। আজকে সমস্ত দেশে একটা ত্রুটির মহোৎসব চলছে। গতকাল বিকালে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির উদ্যোগে ‘করোনা মোকাবিলায় স্থানীয় সরকারের ভূমিকা’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে এতে জেএসডির প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন সংগঠনটির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। ব্যারিস্টার ফারাহ খানের পরিচালনায় সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, জেএসডির কার্যকরী সভাপতি মো. সিরাজ মিয়া, আ ক ম আনিসুর রহমান খান কামাল, সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন তালুকদার, তৌহিদুল হোসেন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সারা দেশে সরকার ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। ২৬ মার্চের পর থেকে গত কয়েক দিনে বোধহয় কয়েক হাজার গ্রেফতার করে ফেলেছে। চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকায় বিএনপি কর্মীরা রাতে বাসায় থাকতে পারেন না। ব্লক রেইড করছে, কেরানীগঞ্জে ব্লক রেইড করে আমাদের নেতা-কর্মীদের অ্যারেস্ট করছে। কিছু বলতে গেলেই তারা বলে যে হেফাজতের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে। অথচ হেফাজতের সঙ্গে সম্পৃক্ততা এই সরকারেরই। মন্ত্রীদের বাসায় বসে মিটিং করেন হেফাজতে ইসলাম নেতারা। হেফাজত নেতারা তাদের সঙ্গে চুক্তি করছেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে ‘কওমি মাতা’ হিসেবে উপাধি দেওয়া হয়েছে।মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার জনগণের সমস্ত আস্থা হারিয়েছে। বিশ্বাস হারিয়েছে। এখন মানুষকে অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করেছে। এই দেশটাকে একটা পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে তারা।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা গণতন্ত্রের কথা বলবেন অথচ কাউকে প্রতিবাদ করতে দেবেন না, কাউকে কথা বলতে দেবেন না। অন্যায়গুলোকে তুলে ধরতে দেবেন না। ভুলগুলোকে চিহ্নিত করতে দেবেন না। তাহলে কীভাবে একটা সরকার চলতে পারে। কাজেই যারা এ রকম করে তারা আর যাই হোক গণতান্ত্রিক সরকার হতে পারে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ভ্যাকসিন প্রথমবার যারা নিয়েছেন, তারা দ্বিতীয়বার সবাই ভ্যাকসিন পাবেন কি না তা আমি জানি না। কারণ যা শুনতে পাচ্ছি যে, ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিচ্ছে। ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ছাড়া এটা গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট নেওয়া যেত। অন্য দেশগুলো সেভাবেই নিচ্ছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘একটি পথ বের করার’ আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
আ স ম আবদুর রব বলেন, করোনা সমস্যা মোকাবিলা জনগণকে নিয়ে করতে হবে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এটা করার কোনো উদ্যোগ নেই। তিনি বলেন, দেশের ভিতরে আমরা এখনো জাতীয় ঐক্য করছি না। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে এই সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে। জনগণের অংশীদারিত্ব ছাড়া এই সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সরকারকে বলব, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করুন।
