কুড়িগ্রামের রাজারহাটে নতুন জাতের গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন তিন তরুণ। শিক্ষিত বেকার এ তরুণরা এ জাতের তরমুজ চাষ করে উপজেলার সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। অল্প জমিতে অল্প পুঁজি দিয়ে অনেক লাভের মুখ দেখছেন তারা। মাত্র দেড় বিঘা জমিতে ৮০ হাজার টাকা খরচ করে ইতিমধ্যে প্রায় দেড় লাখ টাকা আয় করার সুযোগ হয়েছে তাদের। এদের দেখাদেখী অনেকেই এ নতুন তরমুজ লাগানোর কথা ভাবছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, ক্রাউন তরমুজ চাষ নতুন করে কুড়িগ্রামের কৃষিতে ভালো অর্জন হবে। সরেজমিন জানা যায়, জেলার রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন হরিশ্বর তালুক গ্রামে তিন শিক্ষিত বেকার তরুণ এবার গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ চাষ করেছেন। অনার্স পড়ুয়া তিন বন্ধু করোনাকালীন তাদের পড়াশোনা বন্ধ থাকায় পরিবারকে সহায়তা করতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে জেলায় প্রথমবারের মতো এ জাতের তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা থেকে ৭০ গ্রাম বীজ সংগ্রহ করে দেড় বিঘা জমিতে বপন করে সব মিলিয়ে খরচ হয় ৮০ হাজার টাকা। খরচ বাদে দেড় লাখ টাকার ওপরে আয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
তরুণ নুর আলম জানান, অভাবের কারণে ঢাকায় কাজ করতে গিয়েছিলাম। পরে অনেক ভেবেচিন্তে আবার এলাকায় ফিরে আসি। ভাবলাম এলাকায় কিছু করা যায় কিনা। কৃষি নিয়ে অনেক আগ্রহ ছিল। পরে কৃষি বিভাগের পরামর্শে উচ্চ ফলনশীল তরমুজ চাষে মনোযোগ দেই। আমরা চাই আমাদের দেখে অন্য তরুণ ও যুবকরাও আগ্রহী হোক। তরমুজ চাষ দেখতে আসা এক তরুণ মাহাবুবুল হাসান জিম জানান, এই প্রথমবার আমাদের এ উপজেলায় ক্রাউন জাতের তরমুজ চাষ শুরু হয়েছে। আমরা কয়েকজন দেখতে এসেছি। পদ্ধতি জেনে নিজেরাও চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছি। বাণিজ্যিকভাবে এর প্রসার করতে পারলে আমরা অনেক উপকৃত হব। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, জেলার রাজারহাট উপজেলায় এই প্রথম উন্নত গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে। এটি প্রথম বাণিজ্যিক ফসল এবং এটি লাভজনকও বটে। তিনি অনার্স পড়ুয়া ছাত্রদের এ কাজে এগিয়ে আসায় ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, তারা কৃষিকে ধারণ করেছে। তারা লাভবান হবে এবং সাফল্যের মুখ দেখছে। আমরা আশা করছি এভাবেই কুড়িগ্রামের কৃষি বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর হবে।