বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

সংক্রমণের সঙ্গে ফের বাড়ছে মৃত্যু

সাতক্ষীরা ও চুয়াডাঙ্গায় ভারতফেরত ১৪ জনের করোনা শনাক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংক্রমণের সঙ্গে ফের বাড়ছে মৃত্যু

ঈদের ছুটি শেষে টানা তিন দিন ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে করোনা সংক্রমণ হার। এক দিনের ব্যবধানে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যুও বেড়েছে। গত এক দিনে মারা গেছেন ৩৭ জন, যা সাত দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর চেয়ে বেশি ৪০ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছিল গত ১২ মে। এ ছাড়া ঈদের ছুটিতে টানা দুই দিনের (১৪ ও ১৫ মে) নমুনা পরীক্ষায় সংক্রমণ হার কমার পর আবারও টানা বাড়ছে। গত ১৬ মে ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ১৭ মে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ১৮ মে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ ও গতকাল ১৯ মে ৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ সংক্রমণ হারের তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২০ হাজার ৫২৮টি নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৬০৮ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এই সময়ে মারা গেছেন ৩৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯২৩ জন। গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৭৩৭ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১২ হাজার ২৪৮ জন। সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৭ জনের মধ্যে ২৪ জন ছিলেন পুরুষ ও ১৩ জন নারী। হাসপাতালে ৩৬ জনের ও বাড়িতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বয়স বিবেচনায় মৃতদের মধ্যে ২৪ জন ছিলেন ষাটোর্ধ্ব, সাতজন পঞ্চাশোর্ধ্ব, দুজন চল্লিশোর্ধ্ব, তিনজন ত্রিশোর্ধ্ব ও একজনের বয়স ছিল ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ১৬ জন ঢাকা, ১৫ জন চট্টগ্রাম, দুজন খুলনা, দুজন সিলেট এবং একজন করে রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে মারা গেছেন।

এদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের তান্ডব। প্রতিদিন চার হাজারের মতো মৃত্যু হচ্ছে দেশটিতে। এই পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মানুষের আসা-যাওয়া বন্ধ থাকলেও দূতাবাসে যোগাযোগ করে প্রতিদিনই ফিরছেন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা। নমুনা পরীক্ষায় তাদের অনেকের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে। ভারতফেরত এসব রোগীর নমুনা পরীক্ষা ও আইসোলেশন বিলম্বিত হওয়ায় সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়ছে। আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী, বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে গত ৫ মে দেশে ফেরা ১৪২ জনের মধ্যে ১১ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। তবে পিসিআর ল্যাবের সেই রিপোর্ট পাওয়া যায় ১৮ মে রাতে। গতকাল সকালে তাদেরকে সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন হোটেল থেকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে নেওয়া হয়। এর মধ্যে পেরিয়ে গেছে ১৪ দিন। অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে গত তিন দিনে দেশে ফিরেছেন অন্তত দেড়শ বাংলাদেশি। এদের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের আইসোলেশনে ও অন্যদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে আটকাপড়া ২৪ বাংলাদেশি গতকাল দেশে ফিরেছেন। সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন অফিসার জাফর ইকবাল ও সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, প্রতিটি যাত্রীর প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর হোটেলে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। আজ তাদের করোনা পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। দিনাজপুরে হিলি চেকপোস্ট দিয়েও দেশে ফিরতে শুরু করেছেন বাংলাদেশিরা। গতকাল বিকাল পর্যন্ত কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনের এনওসি এবং করোনার নেগেটিভ সনদ নিয়ে ৩৭ জন দেশে ফিরেছেন। তাদেরকে স্থানীয় তিনটি আবাসিক হোটেলে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তারা সেখানে নিজ খরচে অবস্থান করবেন। এ ছাড়াও ৫৫ জন আসার অপেক্ষায় রয়েছে। গত বছরের ৩০ মার্চ থেকে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পাসপোর্টযাত্রী পারাপার পুরোপুরি বন্ধ ছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর