বুধবার, ৩০ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য

নীরব দুর্ভিক্ষে সোয়া ৪ কোটি মার্কিনি!

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

আমেরিকায় নীরব দুর্ভিক্ষের উদ্বেগজনক তথ্য উদ্ঘাটন করেছে ফেডারেল সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন মার্কিন পরিসংখ্যান ব্যুরো। করোনাকালে সরকারের নানা প্রকার ভর্তুকি ও প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা সত্ত্বেও ২ কোটির বেশি মার্কিনি প্রয়োজনীয় খাদ্য পাচ্ছে না। আরও ৪ কোটি ২০ লাখ মার্কিনি রয়েছে যারা চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য সব সময় পাচ্ছে না। গরুর মাংস, দুধ ও শূকরের মাংসের মতো অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে স্বল্প ও মাঝারি আয়ের মানুষের ওপর। চলতি বছর করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দ্রব্যমূল্য এতটাই বেড়েছে যে কোনোভাবেই প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য সংগ্রহে সক্ষম                হচ্ছে না নিম্ন আয়ের মার্কিনিরা। বেকার ভাতা বন্ধ হওয়ার পর দুর্ভিক্ষাবস্থা আরও বাড়বে বলে মন্তব্য করা হয়েছে মার্কিন পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপরোক্ত জরিপ পরিচালনাকারীদের প্রতিবেদনে। কারণ আবারও কর্মস্থলে প্রত্যাবর্তন করলে আগের বেতনই তারা পাবেন। অথচ বছরের ব্যবধানে সবকিছুর মূল্য বেড়েছে গড়পড়তা ৩২ ভাগের বেশি। মার্কিন পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় নিপতিত হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের মানুষ। এ হার ১৫ ভাগ। হিসপ্যানিক আমেরিকানের হার আরও বেশি- ১৬ ভাগ। দুর্ভিক্ষে পড়াদের মধ্যে ২৪ ভাগেরই উচ্চ ডিগ্রি নেই। এসব অভাবী মানুষের কর্মস্থল করোনাকালে বন্ধ হয়ে গেছে। ৩৩ ভাগের কর্মস্থলের অস্তিত্ব বিলীন হয়েছে অর্থাৎ সেসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চরম অভাবে পড়া মার্কিনিদের ২৪ ভাগেরই বার্ষিক আয় ছিল ২৫ হাজার ডলারের কম।

এ জরিপ প্রসঙ্গে নর্থ-ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট ফর পলিসি রিসার্চের অধ্যাপক ডায়ানে হুইটমোর বলেন, ‘এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে এখনো অনেক মানুষ খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এহেন অবস্থার অবসানে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব না হলে অভাবে পড়া মার্কিনির সংখ্যা ক্রমাগত আরও বাড়বে।’

প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে কংগ্রেসে পাস হওয়া বিধি অনুযায়ী বেকার ভাতা প্রদানের সময় দুই দফা বাড়ানো হয়েছে। ফুডস্ট্যাম্পের বরাদ্দও বাড়ানো হয়। করোনা স্টিমুলাস চেকও সবার কাছে পাঠানো হয়। টিকা প্রদানের কার্যক্রম ত্বরান্বিত হওয়ায় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও খোলা হয়েছে। কমপক্ষে ৯০ লাখ মানুষের বেকারত্ব ঘুচেছে। এর পরও দুর্ভিক্ষাবস্থার অবসানের নাম-নিশানা নেই। কারণ দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক আকারে বেড়েছে। মূল্য নিয়ন্ত্রণের কোনো প্রয়াস না থাকায় ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে করোনা-পরবর্তী সময়ও মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর