শিরোনাম
শনিবার, ১০ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ছেলেদের বিলাসী জীবনে ঠাঁই হলো না বাবার

দায়িত্ব নিলেন মেয়ে

লক্ষীপুর প্রতিনিধি

ছেলেদের বিলাসী জীবনে ঠাঁই হলো না বাবার

লক্ষীপুরে তিন বিত্তবান ছেলের বিলাসী জীবন-যাপনে ঠাঁই হলো না ৯৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ বাবা শফিকুল ইসলামের। বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন তিনি। বাবার সেবায় ভাইদের মধ্যে দ্ব›েদ্ব ছেলেদের পৃথক অট্টালিকায় বৃদ্ধ বাবার ঠাঁই হয়নি। এ অবস্থায় গতকাল সকালে ঘরের সামনের উঠানে খোলা আকাশের নিচে বৃদ্ধকে ফেলে রাখেন তার ছেলেরা। ঘটনাটি ঘটেছে পৌর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেঘনা রোড সংলগ্ন স্বপ্ন মহলের সামনে। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবশেষে বৃদ্ধ বাবার দায়িত্ব নেন তার বড় মেয়ে। এদিকে বাবাকে খোলা আকাশের নিচে রাখার খবর ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে। 

জানা যায়, লক্ষীপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম। তার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন। দুই বছর আগে তিনি তার সম্পত্তি সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে দিয়ে দেন। তার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বিজিবি সদস্য, মেজো ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য শাহ আলম ও ছোট ছেলে প্রবাসী আলমগীর হোসেন। সব ছেলেই প্রতিষ্ঠিত ও সমাজে বিত্তবান হিসেবে পরিচিত। সবারই বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে এলাকায়। সম্প্রতি  বৃদ্ধ বাবার সেবা শুশ্রƒষা নিয়ে শফিকুলের ছেলেদের মধ্যে দ্ধন্ধ দেখা দেয়। বর্তমানে কেউ তার সেবা করতে চাইছেন না। শুক্রবার সকালে বড় ছেলের বাসা থেকে মেজো ছেলে শাহ আলমের বাসার সামনে বৃদ্ধ বাবাকে রেখে যাওয়া হয়। শাহ আলম তার বাবাকে রাখতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এমন প্রেক্ষাপটে ঘরের সামনে খোলা আকাশের নিচে উঠানেই তাকে ফেলে রাখা হয় প্রায় ৩ ঘণ্টা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিন্দার ঝড় ওঠে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল ইকবালসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় বৃদ্ধের বড় মেয়ে সুরাইয়া আক্তারও তার স্বামীর বাড়ি থেকে ছুটে আসেন বাবার কাছে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের হস্তক্ষেপে বৃদ্ধ বাবার দায়িত্ব নেন মেয়ে সুরাইয়া।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল ইকবাল জানান, ‘বাড়ির বাইরে এক বৃদ্ধ বাবাকে ফেলে রাখার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় তার ছেলেদের সঙ্গে আলাপকালে তারা তাদের বৃদ্ধ বাবাকে অসুস্থ হওয়ায় সেবার বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে বৃদ্ধ শফিকুলের এক মেয়ে এসে তাকে নিতে চাইলে প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় মেয়ের বাড়িতে পৌঁছানো হয়। তিনি আরও বলেন, সব বাবা-মা তাদের সন্তানের কাছে ভালো থাকুক, এটাই আমরা চাই।’

সর্বশেষ খবর