জমি নিয়ে বিরোধে ফরিদপুরে একজন ও মাদারীপুরে একজন খুন হয়েছেন। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো বিবরণ-
ফরিদপুর : সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শৌলডুবি গ্রামে জমিসংক্রান্ত বিরোধে মধ্যযুুগীয় কায়দায় নির্যাতনে কোহিনুর বেগম (৪০) নামে একজনকে হত্যা করা হয়েছে। স্বামীপরিত্যক্তা ওই মহিলার বাবার নাম ফজলু ফকির। এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোহিনুরের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল ইউনুস মাতুব্বরের। এর জেরে বিভিন্ন সময় তার ওপর নির্যাতন চালান ইউনুস মাতুব্বর ও তার পরিবারের সদস্যরা। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ইউনুস মাতুব্বর ও তার ছেলে জাহিদ মাতুব্বরের নেতৃত্বে কোহিনুরের ওপর পাঁচ ঘণ্টা শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। কোহিনুর প্রাণ বাঁচাতে পাশের লিপি আক্তারের বাথরুমে পালালে সেখান থেকে জাহিদ দরজা ভেঙে বের করে আনেন। নির্যাতন থেকে বাঁচতে একপর্যায়ে পুকুরে ঝাঁপ দেন। কিন্তু পুকুর থেকে উঠিয়ে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে তার ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়। সন্ধ্যার দিকে ইউনুসের বাড়ির উঠানের সামনে নিয়ে বেদম পেটানো হয়। এ অবস্থায় কোহিনুর মারা যান। স্থানীয়রা জানান, ইউনুস মাতুব্বর ও তার ছেলেরা ভয়ানক। কোহিনুরকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালিয়ে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অনেকে কোহিনুরকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেও ইউনুস ও তার ছেলেদের হুমকির মুখে সরে যেতে বাধ্য হন।
এদিকে প্রকাশ্য দিবালোকে এমন ঘটনায় এলাকাজুড়ে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কোহিনুরের ওপর নারকীয় নির্যাতন ও হত্যায় দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয়রা। সদরপুর থানার ওসি সুব্রত গোলদার বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় খবর পেয়ে আমি ফোর্স নিয়ে কোহিনুরের লাশ উদ্ধার করি। সুরতহাল করে লাশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার গায়ে মারধরের চিহ্ন রয়েছে। অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।’মাদারীপুর : ডাসার থানার বালিগ্রাম এলাকায় জমিসংক্রান্ত বিরোধে গতকাল সকালে সোহাগ তালুকদার (৩২) নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সোহাগ একই এলাকার শামসুল হক তালুকদারের ছেলে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম বোতলা গ্রামের শামসুল হক তালুকদারের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে একই এলকার আহাদ মোল্লার দ্বন্দ্ব ছিল। এর জেরে সকালে শামসুল হকের ছেলে সোহাগকে লাইসেন্স করা বন্দুক দিয়ে গুলি করা হয়। স্থানীয়রা তাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। তবে নেওয়ার পথেই সোহাগ মারা যান। এ ঘটনায় শামসুল হক তালুকদার বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে ডাসার থানায় মামলা করেছেন। ঘটনার পরই প্রধান আসামি আহাদ মোল্লাকে লাইসেন্স করা বন্দুকসহ গ্রেফতার করে পুলিশ।