উঁচু গাছের মগডালে বাদুড়ের ঝুলে থাকা একসময় ছিল গ্রাম-গঞ্জের স্বাভাবিক দৃশ্য। তবে এখন গ্রাম-গঞ্জ ঘুরলেও দেখা মেলে না উড়তে জানা একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণীটির। বসবাসের জন্য উপযুক্ত গাছপালা না থাকায় এবং খাবারের সংকটের কারণে বাদুড় আজ বিলুপ্তপ্রায়।
পাখির মতো উড়লেও আকৃতির কারণে বাদুড়ের কদর নেই। নানা কল্প-কাহিনির আতঙ্ক সৃষ্টিকারী প্রাণী হিসেবে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও সোনাখুলি দোলাপাড়া গ্রামের নিভৃত পল্লীতে নির্ভয়ে আবাস গড়ে তুলেছে এসব বাদুড়।
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের সোনাখুলি দোলাপাড়া গ্রামের একটি পুরনো বটগাছে বাসা বেঁধেছে প্রায় শতাধিক বাদুড়। বটগাছের শাখা-প্রশাখায় হুকের মতো পা দুটো আটকিয়ে নিস্তব্ধতায় ঝুলছে অসংখ্য বাদুড়। রাতের অক্লান্ত শ্রমে যেন তারা শুধু একটু প্রশান্তির ঘুম খুঁজছে। সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের সোনাখুলি দোলাপাড়া গ্রামের হরিকান্ত রায় বলেন, ১০ বছর ধরে এরা স্থায়ীভাবে এখানেই আছে। একসময় আরও বেশি ছিল। এখন ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। সন্ধ্যা হলেই দলে দলে ছুটে যায় এরা খাবারের সন্ধানে। ঘুরে বেড়ায় এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায়। ভোরের আলো ফোটার আগেই দলবেঁধে আবার বটগাছে ফিরতে শুরু করে এই স্তন্যপায়ী প্রাণীরা। সারা বছর এখানে নিশ্চিন্তে বাস করে বাদুড়গুলো।পাখি পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেতুবন্ধনের সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বাদুড় মানবকল্যাণকারী ও পরিবেশবান্ধব একটি প্রাণী। এরা মানুষের উপকারই করে থাকে। বিশেষ করে কলা ও অ্যাভোকাডোসহ প্রায় ৩০০ রকমের গাছের বীজ ছড়াতে সাহায্য করে এরা। আবার কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল রক্ষা করে। তাই বাদুড় রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। বাদুড়কে অনেক সময় ক্ষতিকর প্রাণী মনে করা হলেও আসলে এটি জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য একটি অতি প্রয়োজনীয় প্রাণী।