রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কাটার ঘটনায় হাই কোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষিকা তিন পদ ছেড়েছেন, ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব ও মোহাম্মদ কাউছার হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি দায়ের করেন। আজ রিটটি বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চে শুনানি হতে পারে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। রিটে ১৪ শিক্ষার্থীর এ ধরনের শাস্তি কেন কর্তৃত্ববহিভর্‚ত ঘোষণা করা হবে না, অভিযুক্ত তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং জেলা পুলিশ সুপারকে বিষয়টি তদন্তপূর্বক কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং ওই শিক্ষার্থীদের প্রত্যেককে ২০ লাখ টাকা করে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, এ সংক্রান্ত রুল জারিরও আর্জি জানানো হয়েছে রিটে। একই সঙ্গে এ ধরনের নিপীড়নমূলক ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস সংস্কৃতি ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের ১৪ জন শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় রাতে বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র নাজমুল হোসেন তুহিন (২৫) ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে স্থায়ীভাবে অপসারণের দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।অভিযুক্ত শিক্ষিকা তিন পদ ছেড়েছেন, ঘটনা তদন্তে কমিটি : রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অবশেষে পদত্যাগ করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। মঙ্গলবার রাতে রবি পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও সিন্ডিকেট সদস্য পদ থেকে লিখিতভাবে পদত্যাগ করেছেন। এ ছাড়াও এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও ভিসি (চলতি দায়িত্বে) আবদুল লতিফ। তারপরও ছাত্রছাত্রীরা ওই শিক্ষিকার অপসারণ দাবিতে অনড় রয়েছেন। ভিসি আবদুল লতিফ জানান, চুল কেটে দেওয়ার ঘটনাটি তদন্তে রবির রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেলকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে স্থায়ী অপসারণ করা হবে। প্রসঙ্গত, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ে ফাইনাল পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় অন্তত ১৩-১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন।