সোমবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

দুই সন্তানকে ফিরে পেতে আপিল জাপানি মায়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই সন্তানকে ফিরে পেতে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন জাপানি মা নাকানো এরিকো। আপিলের বিষয়টি গতকাল সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন এরিকোর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এর আগে ২১ নভেম্বর হাই কোর্টের রায়ে দুই সন্তানকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাননি জাপানি মা। রায়ে বলা হয়, সন্তানরা থাকবে বাবার কাছে। তবে মা বছরে তিন মাস বাংলাদেশে এসে ১০ দিন করে সন্তানদের নিজের কাছে রাখতে পারবেন।

রায় ব্যাখ্যা করে আদালত বলে, যেহেতু মা জাপানি নাগরিক, সেখানে তার বসবাস ও কর্মস্থল, সে কারণে তিনি তার সুবিধামতো সময়ে বাংলাদেশে এসে শিশুদের সঙ্গে প্রতিবার কমপক্ষে ১০ দিন একান্তে সময় কাটাতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বছরে তিনবার বাংলাদেশে তার যাওয়া-আসাসহ ১০ দিন অবস্থানের যাবতীয় খরচ শিশু দুটির বাবাকে বহন করতে হবে। আদালতের আদেশে আরও বলা হয়, অতিরিক্ত সময়ে যাওয়া-আসা বা বাংলাদেশে অবস্থানের খরচ মা বহন করবেন। এ ছাড়া বাবা মাসে কমপক্ষে দুবার ছুটির দিন শিশুসন্তানদের ভিডিওকলে মায়ের সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন।

২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানের এরিকো ও বাংলাদেশি-আমেরিকান ইমরান শরীফ জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিন মেয়েসন্তানের জন্ম দেন এরিকো। তারা হলো- জেসমিন মালিকা, লাইলা লিনা ও সানিয়া হেনা। এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক। মালিকা, লিনা ও হেনা টোকিওর চফো সিটিতে আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসআইজে) শিক্ষার্থী ছিল। চলতি বছর ১৮ জানুয়ারি ইমরান শরীফ বিয়েবিচ্ছেদের (ডিভোর্স) আবেদন করেন। ২১ জানুয়ারি ইমরান এএসআইজে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ এরিকোর সম্মতি না থাকায় তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পরে ইমরান তার মেয়ে জেসমিন ও লিনাকে স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপ থেকে অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। ২৫ জানুয়ারি ইমরান আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে থাকা তার সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। এরিকো তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর ২৮ জানুয়ারি এরিকো টোকিওর পারিবারিক আদালতে তার সন্তানদের জিম্মার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়ে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি শিশুদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সাক্ষাতের আদেশ দেয়। ইমরান আদালতের আদেশ ভঙ্গ করে মাত্র একবার মায়ের সঙ্গে দুই মেয়ের সাক্ষাতের সুযোগ দেন। এরিকোর অভিযোগ, ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট নেন। ২১ ফেব্রুয়ারি ইমরান তার দুই মেয়ে জেসমিন ও লাইলাকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।

সর্বশেষ খবর