বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. আবু রায়হান বলেছেন, সম্প্রতি সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ) নামক রোগটি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশে মৃত্যুর তৃতীয় কারণ এই রোগটি। এই রোগের সঙ্গে বায়ুদূষণ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ডা. রায়হান বলেন, ঢাকা বায়ুদূষণে সব সময় শীর্ষ কাতারে থাকছে। ১০ বছর পর এই শহর বসবাসের যোগ্য থাকবে কি না তা ভাবতে হবে। দূষণের কারণে দিল্লিতে বলিউড তারকাদের অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানাতে দেখেছি। আমাদের এখানে দূষণ নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে একসময় অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ঘুরতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের শ্বাসতন্ত্র সরাসরি বাতাসের সঙ্গে সংযুক্ত। বাতাসে ক্ষতিকর উপাদান বেড়ে গেলে পুরো শ্বাসতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শ্বাসতন্ত্র হয়ে রক্তের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিডনি বিকলের পেছনেও দূষিত বায়ুর দায় আছে। বায়ুদূষণের কারণে শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। রাজধানীতে শ্বাসকষ্ট, যক্ষ্মা, হাঁপানি, চোখের সমস্যা, ব্রঙ্কাইটিস, ফুসফুসে ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যাই বেশি। এর অন্যতম কারণ হলো- ধুলার দূষণ। যেমন বাতাসে নাইট্রোজেন অক্সাইড বেড়ে গেলে তা রক্তে হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে মিশে ব্লুবেবি ডিজিজ নামের এক ধরনের রোগ তৈরি করে। ধুলাদূষণের প্রভাব শিশুদের ওপর বেশি পড়ে। যার কারণে শিশুরা নিউমোনিয়া, সর্দি, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয়। অ্যালার্জির প্রধান কারণ বায়ুদূষণ। অ্যালার্জি পরে অ্যাজমায় রূপান্তরিত হয়। শীতকালে কুয়াশা তৈরি হয় ধুলার সঙ্গে জলীয় বাষ্প মিলে। যেখানে ধুলা বেশি, কুয়াশাও সেখানে বেশি। এই কুয়াশা ফুসফুসে গিয়ে শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগ সৃষ্টি করে। এ জন্য শীতকালে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমার মতো রোগ বেড়ে যায়। দূষণ কমলে বায়ুদূষণের কারণে যে রোগগুলো হয়, তা কমে যেত। কভিডের দুই বছরে শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগ কমে গেছে। কারণ, মানুষ মাস্ক পরেছে।