রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

ব্যাংকারদের নতুন বেতন কাঠামোর বাস্তবায়ন চায় ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন চায় ব্যাংকের এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)। ব্যাংক কর্মীদের চাকরির ক্ষেত্রে বেতন কাঠামো নির্ধারণের নির্দেশনার বিরোধিতা করে সংগঠনটি আপত্তি জানিয়েছিল। পরে গত ১ ফেব্রুয়ারি ওই নির্দেশনা সংশোধন করে নতুন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়। সংশোধিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যাংকাররা পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে বলে বিভিন্ন ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন ঘোষিত বেতন কাঠামোতে বলা হয়েছে- জেনারেল সাইডের কর্মকর্তাদের ন্যূনতম বেতন ৩৯ হাজার  টাকা দিতে হবে। এছাড়া ক্যাশ সাইডের কর্মকর্তাদের ৩৬ হাজার টাকা দিতে হবে। পাশাপাশি এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও সময় বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকগুলোকে এ কাঠামো পুরোপুরিভাবে কার্যকরে ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। অন্য ব্যাংকগুলোকে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে কার্যকর করতে হবে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্যাংকগুলোর আর্থিক সক্ষমতা পর্যালোচনায় এ সংশোধনী আনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে- শিক্ষানবিসকালে জেনারেল সাইডের কর্মকর্তাদের ২৮ হাজার এবং ক্যাশ সাইডে ২৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে। এ হারে বেতন-ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০১৩ সালে লাইসেন্স পাওয়া এবং তার পরে স্থাপিত ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংককে মূল বেতন ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে কার্যকর করতে হবে। আর ভাতা অংশ ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে কার্যকর করলে চলবে। তবে ব্যাংক চাইলে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে পুরো বেতন-ভাতা দিতে পারবে। বেসরকারি খাতের অন্যান্য ব্যাংকের বেতন-ভাতা আগামী এপ্রিল থেকে কার্যকর করতে হবে। পাশাপাশি নতুনভাবে নির্ধারিত বেতন-ভাতা কার্যকরের পর একই পদে আগে থেকে কর্মরতদের আনুপাতিক হারে বেতন বাড়াতে হবে। এর বাইরে বার্তাবাহক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী ও অফিস সহায়কের পদে নিয়মিত বা চুক্তিভিত্তিক বা দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োগ করা কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সব বিভাগীয় শহরসহ নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর এলাকায় কর্মরত কর্মচারীদের ন্যূনতম বেতন-ভাতা আগে নির্ধারিত ২৪ হাজার টাকা অপরিবর্তিত থাকবে। অন্যান্য জেলা শহরে এসব পদে কর্মরতদের ন্যূনতম বেতন-ভাতা হবে ২১ হাজার টাকা। অন্যান্য উপজেলা বা এলাকায় কর্মরতদের ১৮ হাজার টাকা। নতুন ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকে বর্তমান বেতন-ভাতার সঙ্গে যে পার্থক্য হবে তার ন্যূনতম ৫০ শতাংশ আগামী এপ্রিল থেকে দিতে হবে। বাকি ৫০ শতাংশ পরের বছরের এপ্রিল থেকে দিলেও চলবে।

বিষয়টি নিয়ে এবিবি সভাপতি ও বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হুসেইন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের সহকর্মীদের উন্নতির জন্য যে কোনো উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম জারি করা নির্দেশনায় কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন বিষয়ে আমাদের অস্পষ্টতা ছিল। ব্যাংক কর্মীদের ভালো বেতন দিলে কেবল মেধাবীরা এখানে আসবে। অদক্ষ কর্মীদের যদি একইভাবে সুবিধা দেওয়া হয় তাহলে দক্ষ যারা তারা হতাশ হবে। এ বিষয়টি পরিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশনা দিয়েছে। আমরা চাই দ্রুত এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হোক। ব্র্যাক ব্যাংক ইতোমধ্যে বাস্তবায়নের জন্য কাজ শুরু করেছে। আমাদের ব্যাংকের জন্য বাৎসরিক প্রায় ১২০ কোটি টাকা নতুন খরচ হবে। অন্যান্য ব্যাংকেও বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে খরচ বাড়বে। তবে ব্যাংকের ব্যবসাও বাড়বে বলে আমরা বিশ্বাস করি। তাই দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবেন সবাই।

সর্বশেষ খবর