স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীতে যে কোনো ধরনের অবকাঠামো নির্মাণে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পাশাপাশি সিটি করপোরেশনেরও অনুমোদন নিতে হবে। তবে সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে অনুমতি নিতে গিয়ে যাতে কেউ হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে মেয়রদের সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল ঢাকা-চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি নিয়ে সচিবালয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এবং ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম আতিক।
মন্ত্রী বলেন, শুধু অনুমোদন দিলেই হবে না। অনুমোদিত স্থাপনা নিয়মিত মনিটরিং করার ব্যবস্থাও রাখতে হবে। ঢাকা শহর এবং এর আশপাশে অনেক সেতু রয়েছে। যেগুলোর নেভিগেশন ফেসিলিটি নেই। এই সেতু ভেঙে নৌ চলাচল সুবিধা রেখে নতুন সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব খাল সংস্কার করে একটি খালের সঙ্গে অন্যটির সংযোগ এবং খালের দুই পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করলে নগরবাসীকে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন শহর উপহার দেওয়া সম্ভব। তাজুল ইসলাম বলেন, মোহাম্মদপুরের বসিলায় খাল দখল করে ট্রাক স্ট্যান্ড, মার্কেট এবং আবাসিক বাসভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কল্যাণপুরে ১৭৩ একর জমির মধ্যে ৩ একর জমি বাদে সব জমি দখল হয়েছে। উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে অভিযান চালিয়ে খালের জমি উদ্ধার করা হয়েছে। শুধু উত্তর সিটি করপোরেশন নয় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেও উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে। অবৈধভাবে যে কেউ খাল দখল করুক না কেন, তা উদ্ধার করা হবেই। আসন্ন বর্ষায় রাজধানীতে জলাবদ্ধতা হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে যেন জনভোগান্তি না হয় সে লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। শুধু ফরমাল সভা করে পরিকল্পনা করলে হবে না ফলাফল আনতে হবে। এ জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ঢাকায় জলাবদ্ধতার অন্যতম প্রধান কারণ খাল ও জলাশয় দখল করে অবকাঠামো নির্মাণ। ওয়াসা থেকে খালগুলো দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করায় খাল সংস্কার, দখলমুক্ত এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এ সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দফতর, সংস্থার চলমান সব প্রকল্পের কাজ সমন্বয় করার তাগিদ দেন মন্ত্রী। সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসন, খাল উদ্ধার, সংস্কার, দখলমুক্ত এবং দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিমের নেতৃত্বে একটি সাব কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।