সোমবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

সংঘর্ষের জেরে চার গ্রাম পুরুষশূন্য, আসামি ৮০০

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের বাগানবাড়ী এলাকার চারটি গ্রাম এখন পুরুষশূন্য। এখানকার বালু ঘাটের আধিপত্য নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ ঘটার পর দুই ইউপি সদস্যসহ ৮০০ জনকে মামলার আসামি করা হয়েছে। ফলে গ্রামগুলোর পরিস্থিতি এমন হয়েছে। অবশ্য দিনে পুরুষদের কেউ কেউ বাড়িতে এলেও রাতে সব পুরুষই অন্যত্র গিয়ে আত্মগোপনে থাকছেন।

জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা থেকে ভূঞাপুরে গোবিন্দাসী পর্যন্ত যমুনা নদীর বাম তীর ঘেঁষে অন্তত ১৯টি অবৈধ বালু ঘাট চালানো হচ্ছে। এরমধ্যে বাগানবাড়ী এলাকায় দীর্ঘ ১৩ বছর যাবত নিকরাইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মতিন সরকার স্থানীয় ভূমি মালিকদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে বালুঘাট পরিচালনা করছেন। এ অবস্থায় চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত নিকরাইল ইউপি নির্বাচনের পর আবদুুল মতিন সরকার পরাজিত হন। ২ নং ওয়ার্ডে নুরে আলম মন্ডল নুহু ও ৪ নং ওয়ার্ডে আবদুল করিম ইউপি সদস্য পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় তারা বালুঘাট দখলে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সম্প্রতি নুরে আলম নুহু দলবল নিয়ে নিকরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি নয়ন সরকারের ‘ভাবীর ঘাট’ নামক বালুঘাটের কর্মচারীদের মারধর করে জবরদখল করে। গত ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ইউপি সদস্য নুরে আলম নুহু তার দলবল ও বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসী এনে বাগানবাড়ী বালুঘাট জবরদখলের জন্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। এ ঘটনায়             উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৭ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়। ওই ঘটনায় ভূঞাপুর থানার এসআই মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ইউপি সদস্য নুরে আলম মন্ডল নুহুকে প্রধান ও আবদুল করিমকে দ্বিতীয় করে ৫৯ জনের নামোল্লেখ করে চারটি গ্রামের অজ্ঞাত আরও ৭০০-৮০০ জনের বিরুদ্ধে গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার খবর ছড়িয়ে পড়ায় নিকরাইল ইউনিয়নের চারটি গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। গ্রামগুলোতে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইউপি সদস্য নুরে আলম মন্ডল নুহুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার স্ত্রী জানান, মামলা হওয়ায় তিনি অন্যত্র রয়েছেন। মোবাইল ফোন বাড়িতে রেখে গেছেন। ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল ওহাব জানান, বালু ঘাটে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় উভয়পক্ষের ৭০০-৮০০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী  মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

 

সর্বশেষ খবর