শুক্রবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বাদুড়ের অভয়ারণ্য দিনাজপুরের বট ও পাকুড় গাছ

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

বাদুড়ের অভয়ারণ্য দিনাজপুরের বট ও পাকুড় গাছ

দিনাজপুর শহরে শতবর্ষী কয়েকটি পুরনো গাছে যুগ যুগ ধরে বসবাস করছে হাজার হাজার বাদুড়। জায়গাগুলো এদের অভয়ারণ্য। শহরের বড়বন্দর মশানকালী মন্দিরের সঙ্গে থাকা পুরনো বট-পাকুড় গাছের ডালে ডালে, পাতায় পাতায় সর্বত্র বাদুড়ের নিরাপদ আবাস। এখানে সকালে কিংবা বিকাল ও সন্ধ্যায় দেখা যায় হাজার হাজার বাদুড়। এই চিত্র প্রতিদিনের। ওই সময়ে গাছের চূড়া দেখে মনে হবে-গাছের পাতা নেই, আছে শুধু বাদুড় আর বাদুড়।  বাদুড় দিনে চলাফেরা করতে পারে না। চলে রাতের আঁধারে। তাই সন্ধ্যা নামলেই এরা খাবারের সন্ধানে চলে যায় দূর-দুরান্তে। আবার সকাল হওয়ার আগেই ফিরে আসে এরা। দিনের বেলায় এ এলাকার গাছের ছায়ায় উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে ঝাঁক ঝাঁক বাদুর। বাদুড়ের এই অভয়ারণ্য দিনাজপুর শহরের কালিতলা-বড়বন্দর সড়কের পাশে মশানকালী মন্দিরের সঙ্গে থাকা শতবর্ষীয় বট-পাকুড়সহ বিভিন্ন গাছ।

শহরের বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক তারে মাঝে মধ্যেই মরা বাদুড় ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। কারণ এই তারের সঙ্গে ছোঁয়া লাগতেই এরা বিদ্যুতায়িত হয় এবং মারা যায়। ওই অবস্থায় তারের সঙ্গে ঝুলে থাকে বাদুর।

ওয়াকেবহাল সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, আজব প্রাণীদের মধ্যে বাদুড় একটা। ডানা আছে আকাশে উড়তেও পারে, তবু সে পাখি নয়, স্তন্যপায়ী প্রাণী! মুখটা শিয়ালের মতো, খরগোশের মতো বড় বড় দুটো কান, ছাতার মতো অদ্ভুত দুটি পাখা। বাদুড় মূলত ফলভোজি। পেয়ারা, লিচু, জামরুল ইত্যাদি ফলের ঠিকানা খুঁজে বের করতে এরা শব্দ তরঙ্গের সঙ্গে সঙ্গে নাকের গন্ধ শক্তির ওপরও নির্ভর করে। স্থানীয় সংগীত শিল্পী প্রশান্ত কুমারসহ অনেকেই জানান, এ এলাকায় এত বাদুড় এক সঙ্গে বসবাস করছে অনেক বছর ধরে। এলাকার মানুষ বাদুড়ের উপর বিরক্ত হয় না। বেশিরভাগ সময়েই এরা দিনের বেলা শতবর্ষী গাছে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে। রাতে বের হয় খাবার সন্ধানে। মানুষ এদের ক্ষতির কারণ নয়। তাই জায়গাগুলোকে নিরাপদ আবাস মনে করেই দিনে-রাতে গড়ে উঠেছে বাদুড়ের বসতি।

সর্বশেষ খবর