শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
কৃষি

জনপ্রিয় হচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

জনপ্রিয় হচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ

অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং ক্যান্সার ও হৃদরোগ প্রতিরোধী হওয়ায় সূর্যমুখী ফুল চাষ দিনকে দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ফরিদপুর জেলায়। কয়েক বছর আগে পরীক্ষামূলক বিএডিসি বীজ খামারে এ ফুলের আবাদ করা হলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। কম খরচ আর স্বল্প সময়ে অধিক লাভ হওয়ায় খুশি চাষিরা। আর সূর্যমুখী ফুল চাষে সহযোগিতা করছে বিএডিসি ফরিদপুর। বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ চাষিদের উৎপাদিত বীজ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। আর সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসছেন বিএসিডির বীজ খামার এলাকায় ও চাষিদের বাগানে। ফলে ফরিদপুর বীজ ভবন এখন দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। বাগানে আসছেন বিভিন্ন বয়সের ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। উপভোগ করছেন ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য।

হরেক রকমের কৃষি উৎপাদনে ফরিদপুর জেলার সুনাম রয়েছে আগে থেকেই। এ জেলায় প্রায় সবধরনের ফসল কম-বেশি উৎপন্ন হয়ে থাকে। আর এ কারণেই ফরিদপুরে কয়েক বছর ধরে চলছে অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সূর্যমুখী ফুলের চাষ।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ক্যান্সার ও হৃদরোগ প্রতিরোধী অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সূর্যমুখীর তেল অন্যান্য সাধারণ তেলের চেয়ে একটু আলাদা। কোলেস্টেরলমুক্ত প্রচুর পরিমাণে প্রাণশক্তি থাকায় সূর্যমুখী তেল শরীরের দুর্বলতা, কার্যক্ষমতা বাড়াতে সূর্যমুখীর ভূমিকা অনন্য। রান্নার জন্য সয়াবিন তেলের চেয়ে সূর্যমুখী তেল দশগুণ বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ। সূর্যমুখী তেল হাড় সুস্থ ও মজবুত করে। শরীরের ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও কপারের চাহিদা পূরণ করে। ভিটামিন ‘ই’ সমৃদ্ধ এ তেল শরীরের নানারকম ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে। সূর্যমুখী তেলে থাকা ম্যাগনেসিয়াম আমাদের মানসিক চাপ দূর করে। এককথায় সূর্যমুখী তেলে মানব দেহের মহৌষুধ হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। সূর্যমুখী তেলের চাহিদা ও ব্যবহার বাড়ায় ফরিদপুরে দিনকে দিন জনপ্রিয় হচ্ছে এ ফুলের আবাদ।

ফরিদপুর জেলার নয়টি উপজেলায় প্রায় দুই শতাধিক চাষি বারি সূর্যমুখী-২ জাতের সূর্যমুখী ফুলর চাষ করেছেন। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারহ।

ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসছে দর্শনার্থীরাও। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৯৫ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল তুলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দুবার সেচ দিতে হয় এ ফসলে। এক একর জমিতে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর এক একর জমিতে প্রায় এক টন বীজ উৎপাদন হয়। এক টন বীজ ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকা বিক্রয় করা যায়। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

ফরিদপুর বিএডিসি ডাল ও তৈলবীজ উৎপাদন খামামারের উপপরিচালক কৃষিবিদ মাহমুদুল ইসলাম খান জিয়া বলেন, ক্যান্সার ও হৃদরোগ প্রতিরোধী অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সূর্যমুখী ফুল চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ফরিদপুরে। আমাদের চুক্তিবদ্ধ চাষিদের দিয়ে সূর্যমুখী ফুল চাষ করে থাকি। এ জেলার উৎপাদিত বীজ সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদা পূরণ করে থাকে।

সর্বশেষ খবর