রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

ভোটাধিকার রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান

মানুষকে ভোটাধিকারের পাহারাদার হতে হবে : ড.কামাল । দলগুলোর সংস্কার করতে হবে : আকবর আলি - কামাল হোসেন আকবর আলি খানকে কমিশনার করলেও ভোট সুষ্ঠু হবে না : আসিফ নজরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোটাধিকার রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান

‘বর্তমান জাতীয় সংকট এবং সমাধানে নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে ভোটাধিকার রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সভায় সভাপতির বক্তব্যে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, মানুষকে ভোটাধিকারের পাহারাদার হতে হবে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার করতে হবে। বেশির ভাগ দল গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ড. কামাল হোসেন বা ড. আকবর আলি খানকে কমিশনার করলেও ভোট সুষ্ঠু হবে না। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক সমাজ-এর ব্যানারে একটি সংগঠন এই সভার আয়োজন করে। সভায় আরও বক্তৃতা করেন গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান, আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

ড. কামাল হোসেন বলেন, মানুষকে ভোটাধিকারের পাহারাদার হতে হবে। এ জন্য মানুষকে সচেতন করতে হবে, পাড়ামহল্লায় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, জনগণ এ দেশের মালিক। সরকার সেই জনগণের সমর্থন ছাড়া টিকে থাকতে চায়। ভোটাধিকার মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান অধিকার। এটি রক্ষা করার জন্য সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। না হলে যারা এই অধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত করতে চায়, তারা সফল হয়ে যাবে। তিনি বলেন, দেশ এখন সর্বগ্রাসী সংকটে। রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে ভগ্নদশা। জনগণের দাবি যখন নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা, তখন সরকার জাতির বিবেককে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তড়িঘড়ি করে আইন প্রণয়ন করেছে একটি সার্চ কমিটি গঠনের জন্য, যা নির্বাচন কমিশন গঠনের আইন বলে প্রচার করা জাতির সঙ্গে তামাশা ও মহা প্রহসনমাত্র।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রবীণ এ আইনজীবী বলেন, আপনাদের সচেতন থাকতে হবে। কোথায় কী হচ্ছে, তা তুলে ধরতে হবে।

ড. আকবর আলি খান বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির করা অনুসন্ধান কমিটির ওপর তার আস্থা নেই। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ মানুষ পাওয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইচ্ছা করলেই ভালো নির্বাচন করতে পারবে না। এ জন্য নির্বাচনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। নির্বাচনে বেশির ভাগ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের। তাদের সিদ্ধান্ত উল্টে দেওয়ার ক্ষমতা ইসির নেই। ভোট কেন্দ্রে আইনগত ক্ষমতা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের। তাদের সিদ্ধান্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা উল্টে দিতে পারেন না। তিনি বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন (জাতীয় নির্বাচনে) জেলা প্রশাসকেরা। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হন সরকারি ও এমপিওভুক্ত বেশির ভাগ শিক্ষক এবং ব্যাংক কর্মকর্তা। তারা জানেন পদে থাকতে হলে সরকারের কথা শুনতে হবে। এই অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আমলাতন্ত্রের ওপর সরকারের ক্ষমতা কমাতে হবে। ইসি একা কিছু করতে পারবে না।

আকবর আলি খান আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোরও সংস্কার করতে হবে। বেশির ভাগ দল গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে না।

অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সরকার ফলাফল বেহাত করতে তিনটি কাজ করছে। সরকার অনুগত লোকদের নিয়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে। তিনি আশঙ্কা করেন, এর মাধ্যমে একটি অনুগত ও মেরুদন্ডহীন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে এবং পেপার অডিট ট্রেইল ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের মাধ্যমে আসল কারচুপি হবে।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে সেখানে ড. কামাল হোসেন বা আকবর আলি খানকে নির্বাচন কমিশনার করা হলেও ভোট সুষ্ঠু হবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর