বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

মৃত রিপনকে পাঁচ বছর পর জীবিত উদ্ধার!

মেহেরপুর প্রতিনিধি

‘মৃত্যু’র পাঁচ বছর পর রকিবুজ্জামান রিপনকে জীবিত উদ্ধার করেছে পিবিআই। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তারিক হাসানের আদালতে তাকে হাজির করা হয়। রকিবুজ্জামান রিপন মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়নের গোভীপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে। কুষ্টিয়া পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. শহীদ আবু সরোয়ার গতকাল লিখিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, ভিকটিম রিপন কৌশলে মো. শরিফুল ইসলাম ছদ্ম নাম ধারণ করে গত ২০২০ সালের ১০ মার্চ গাইবান্ধা জেলার শিমিলা আক্তার নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। এ ছাড়া সে ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেডে ইলেকট্রিশিয়ান পদে চাকরি করছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর প্রযুক্তি ব্যবহার করে রিপনকে সুস্থ ও জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে রকিবুজ্জামান রিপনের সঙ্গে গাংনী হাটবোয়ালি গ্রামের আকবর আলীর মেয়ে মোছা. শ্যামলী খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে তিনি শ্বশুরবাড়ি হাটবোয়ালি গ্রামে বসবাস শুরু করেন। এরপর ২০১৭ সালে কাউকে কিছু না জানিয়ে রিপন নিরুদ্দেশ হয়ে যান। এরপর রিপনের বাবা মনিরুল ইসলাম ২০১৮ সালে ১০ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩৬৪/১০৯ পেনেল কোড ধারায় ছেলের বউ শ্যামলী খাতুন,  বেয়াই আকবর আলী, বিয়াইন সুফিরন ও তক্কেল আলীর নামে মামলা করেন। রিপনের পিতা মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলের কোনো খোঁজখবর না পেয়ে সন্দেহ হয় ছেলেকে তার শ্বশুরপক্ষীয়রা খুন করে গুম করেছে। এ ব্যাপারে আমি কোর্টে মামলা করি। কোর্ট বিষয়টি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। পিবিআই আমাদের কাছ থেকে তার মোবাইল নম্বর ও ছবি নিয়ে তাকে উদ্ধার করে। তবে সে কেন নিখোঁজ হয়েছিল তা আমার জানা নেই।

রিপনের স্ত্রী শ্যামলী খাতুন বলেন, ২০১৬ সালের ৯ জানুয়ারি আমাদের বিয়ে হয়। এর কিছুদিন পর থেকে তিনি আমাকে নিয়ে আমার বাবার বাড়িতে বসবাস করতেন। আমাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ২০১৭ সালের ১৫ এপ্রিল আমাকে কিছু না জানিয়ে তিনি উধাও হয়ে যান। এর পর থেকে তিনি আর আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে বিষয়টি আমি জানাই। তখন তারা আমাকে বলেন তাদের দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দিলে তারা আমাকে নিয়ে আসবে। তাদের ছেলে আমার সঙ্গে সংসার করবে। কিন্তু আমার বাবার সে টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই। আমার বাবা একজন দিনমজুর। এর কিছু দিন পর আমাদের বাড়িতে পুলিশ যায়।

পুলিশ আমাদের জানায়, আমাদের নামে আমার স্বামীকে খুন করে গুমের অভিযোগে মামলা আছে। মামলায় পুলিশ তদন্ত করে রিপোর্ট দেয়, তিনি আত্মগোপনে আছেন। পরে  আদালত পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। তারা তদন্ত করে। এ মামলায় আমি আর আমার মা বহু হয়রানির শিকার হয়েছি। আদালতের কাছে আমার দাবি আমাদের হয়রানির বিচার ও আমার সন্তানের নিশ্চিত ভবিষ্যতের ব্যবস্থা যেন হয়।

সর্বশেষ খবর