শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

করোনা টেস্ট নিয়ে প্রতারণা, গ্রেফতার ১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

কুমিল্লার একটি হাসপাতালে করোনা টেস্ট করাতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন বিদেশগামী বেলাল হোসেন। প্রতারক নিজেকে হাসপাতালে কর্মরত পরিচয় দেয়। রেজাল্ট নেগেটিভ আসবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। কিন্তু তার করোনার ফল পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি। এবার বেলাল নিজেই গড়ে তোলেন প্রতারক চক্র। বেলালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সবুজকে নিয়ে এ চক্র গড়ে তোলেন। করোনা টেস্ট করাতে আসা বিদেশগামীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে করোনার ফল পরিবর্তন করার আশ্বাস দিত চক্রের সদস্যরা। বিনিময়ে হাতিয়ে নিত টাকা। এভাবে চক্রটি কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে। প্রায় বছরব্যাপী চলে প্রতারণা। এ চক্রের হোতা বেলাল ও তার সহযোগী সবুজসহ ১৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১। ঢাকা, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- জসিম উদ্দিন, সুলতান মিয়া, বেলাল হোসেন, আবুল হোসেন, আবদুল নুর, আলফাজ মিয়া, মো. শামিম, আহাম্মদ হোসেন, ইমরান উদ্দিন মিলন, সবুজ মিয়া, আবদুর রশিদ, আবদুল করিম চৌধুরী, আঙ্গুর মিয়া ও আলমগীর হোসেন। প্রতারণার মাধ্যমে আয় করা ৭ লাখ টাকা, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১২০টি সিম কার্ড, ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন, ট্যাব, ৩২টি মোবাইল, একটি পাসপোর্ট, নোটবুক ও চক্রের সদস্যদের বেতনের হিসাব জব্দ করা হয়। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা টেস্ট নেগেটিভ ফল বদলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। প্রতারক চক্রের সদস্যরা করোনা টেস্টের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলার নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে বিদেশগামী যাত্রী ছদ্মবেশে অবস্থান নিয়ে সাধারণ যাত্রীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতেন। সেগুলো বেলাল ও সবুজকে পাঠাতেন। বিদেশগামী যাত্রীরা টেস্টের ফলাফল হাতে পাওয়ার আগেই বেলাল ও সবুজ সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের করোনা টেস্ট বিভাগের ডাক্তার অথবা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ পরিচয়ে করোনা টেস্টের ফল পজিটিভ এসেছে বলে জানাতেন। পরে পজিটিভ থেকে নেগেটিভ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিত তারা। ভুক্তভোগীরা বেলাল ও সবুজের কথা অনুযায়ী মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠালে অন্য সদস্যরা তা সংগ্রহ করতেন। টাকা সংগ্রহের অবস্থান সব সময় ভিন্ন ভিন্ন জেলায় নির্ধারণ করা হতো। প্রতারণার কাজে ব্যবহার করতে সিম সরবরাহ করতো ইমরান উদ্দিন মিলন।

সর্বশেষ খবর