বকেয়া বেতনের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের অবরোধের সময় সংঘর্ষ শুরু হলে গতকাল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শ্রমিকদের অবরোধ ভাঙতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ ছাড়াও রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। সংঘর্ষে ফতুল্লা পুলিশের সার্কেল এসপিসহ ১০ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ শিবু মার্কেট এলাকায় অবস্থিত রূপসী গার্মেন্টের প্রায় ৫০০ শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করেন। এ সময় পুলিশ ও মালিকপক্ষ শ্রমিকদের অবরোধ তুলে নিতে সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা চালায়। পুলিশ শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদের কর্মসূচি প্রত্যাহারে ব্যর্থ হয়ে লাঠিচার্জ শুরু করে। শ্রমিকরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পাল্টা জবাব দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ গুলি বর্ষণ ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের সাইনবোর্ড থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে ফতুল্লা পুলিশের সার্কেল এসপিসহ ১০ জন আহত হন। শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, রূপসী গার্মেন্টসে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তাদের মধ্যে কারও তিন মাসের, আবার কারও দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। শ্রমিকদের দাবি, মালিক পক্ষ তাদের এক মাসের বেতন আটকালেই মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হয়। সমস্যার বিষয়টি মালিক পক্ষকে বারবার জানালেও কোনো কাজ হয়নি। এর মধ্যে ৩০ মার্চ ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেতন পরিশোধ করা হয়নি। ফলে গতকাল শ্রমিকেরা কারখানায় এসে বিক্ষোভ এবং অবরোধে অংশ নিতে বাধ্য হন।
নারায়ণগঞ্জ ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘আমরা চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি। শ্রমিকরা আমাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আমরা বাধ্য হয়েছি লাঠিচার্জ করতে। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় রাস্তাটি অবরোধ করে রাখা হয়েছিল। রোগীর অ্যাম্বুলেন্স, শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীরা রাস্তায় যানজটে আটকে ছিল। বাধ্য হয়েই আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অ্যাকশনে গেছি।’