পশ্চিমবঙ্গে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন উদযাপিত হয়েছে শুক্রবার। ১৪২৯ বঙ্গাব্দের প্রথম দিনকে বিপুল উদ্দীপনায় বরণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল মন্দিরে মন্দিরে ভক্তদের প্রার্থনা, মঙ্গল শোভাযাত্রা, কোথাও ইলিশ উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বারপুজো, পেটপুরে ভূরিভোজ, গান-আড্ডা, নতুন পোশাক পরে আনন্দধ্বনি করা।
বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানাতে এবারও এদিন সকালের দিকে কলকাতার যাদবপুর সুলেখা মোড় থেকে যোধপুর পার্ক পর্যন্ত বিশাল মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। তাতে পা মেলান কচি-কাঁচা থেকে বয়স্ক, স্কুলের শিক্ষার্থীরাও। অন্যদিকে আবার পদ্মার ইলিশ উৎসব দিয়ে অভিনব বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্যটির উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁর মানুষ। বনগাঁ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান জ্যোৎস্না আঢ্যের উদ্যোগে স্থানীয় বিএস ক্লাবের মাঠে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়। নাচ-গান তো ছিলই সেই সঙ্গে পান্তা ভাত, কচুশাক, ইলিশ মাছ ভাজা, বিউলির ডাল আর শেষ পাতে জিলাপি। সব মিলিয়ে বাঙালিয়ানার সঙ্গে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়। ইলিশ উৎসবে অংশগ্রহণ করে খুশি এলাকার বাসিন্দারা। এর পাশাপাশি কলকাতার কালীঘাট মন্দির, লেখ কালিবাড়ী, দক্ষিণেশ্বর কালি মন্দির, তারকেশ্বর মন্দির, তারাপীঠের কালীমন্দির, বেলুড় মঠ-সর্বত্রই ছিল ভক্তদের ভিড়। করোনার আবহে গত দুই বছর এসব মন্দিরের দরজা কার্যত বন্ধ ছিল দর্শনার্থীদের জন্য। ফলে এদিন সকাল থেকেই ওসব ধর্মীয় স্থানগুলোতে ছিল ভক্তদের পুজো দেওয়ার লম্বা লাইন। শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্কেও বর্ণিল অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ উৎসবে শামিল হয় এলাকার মানুষ। সেখানে সংগীতানুষ্ঠানে গলা মেলান শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব।
রাজ্যজুড়েই প্রায় প্রতিটি দোকান-প্রতিষ্ঠানে এই পয়লা বৈশাখের দিন ‘হালখাতা’ ও বিশেষ পুজো দেওয়া হয়।তেমনই দুই বছর পর কলকাতার ময়দানেও বড় দুই ফুটবল ক্লাব-ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান- এই ক্লাবগুলোতেও এবার খুঁটি পুজোর আয়োজন করা হয়। ফলে ক্লাব কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ফুটবলার, সদস্য ও সমর্থকদের মধ্যেও ছিল বিশাল উদ্দীপনা। সকাল ৮টা নাগাদ ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাঁবুতে এবার পুজো শুরু হয়। মন্ত্র পাঠ করে রীতি মেনে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয় গোলপোস্ট বা বার। বারপুজো অনুষ্ঠান শেষে ক্লাব পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে প্রথা মেনেই সদস্য-সমর্থকদের মিষ্টিমুখ করানো হয়।
একইভাবে আরেক জনপ্রিয় ঐতিহ্যবাহী ‘মোহনবাগান’ ক্লাব তাঁবুতেও সম্পন্ন হয় তাদের বারপুজো। ঐতিহ্য ও রীতি মেনে মন্ত্র পাঠ করে নতুন গোলপোস্ট লাগানো হয়।